কলকাতা:  এবিপি আনন্দের খবরের জের! পাটুলিতে তরুণী নিগ্রহের ঘটনায় অবশেষে ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ!
ঘটনা ঘটেছিল রবিবার রাতে। অথচ অভিযুক্তরা ধরা পড়ল মঙ্গলবার সন্ধেয়! পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধে ছ’টায় পাটুলি ঘোষপাড়া থেকে নীলাঞ্জন দাস ওরফে নীরঞ্জন,নীলকমল দাস ওরফে কুট্টি এবং শিবশঙ্কর দাস ওরফে শিবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিন অভিযুক্তই একই জায়গায় ছিল।
যদিও ঘটনার পর থেকে পুলিশ বারবার দাবি করছিল, অভিযুক্তরা নাকি কলকাতার বাইরে পালিয়ে গিয়েছে! মোবাইল ফোন বন্ধ করে তারা আলাদা আলাদা ভাবে গোপন ডেরায় আশ্রয় নিয়েছে! কিন্তু বাস্তবে ঘটল ঠিক উল্টোটা!
যে ঘোষপাড়া থেকে অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে, সেখান থেকে পাটুলি থানার দূরত্ব মেরে কেটে দু’মিনিট! ৩ অভিযুক্তর বাড়িও ঘোষপাড়া থেকে হাঁটা পথের দূরত্ব!
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অভিযুক্তদের পালানোর জন্য সেফ প্যাসেজ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল? চাপের মুখেই কি এই গ্রেফতার?
এলাকায় কান পাতলেই এই তিনজনের নামে শোনা যায় ভুরিভুরি অভিযোগ! অনেকেরই প্রশ্ন, তাহলে এত দিন ধরে পুলিশ কী করছিল! পুলিশ কি এসবের কিছুই জানত না! নাকি জেনেও হাত গুটিয়ে বসেছিল তারা?
৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও, অন্য একটি বিতর্কও ধাওয়া করছে উর্দীধারীদের! কারণ, প্রথমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ৩৪১ ধারায় জোর করে আটকে রাখা এবং ৩২৩ ধারায় সামান্য আঘাত।
কিন্তু, যেখানে গাড়ি ভেঙে একজন তরুণীকে জোর করে বার করা এবং মারধরের মতো গুরুতর অভিযোগ, সেখানে এমন জামিনযোগ্য লঘু ধারা কেন? প্রশ্ন তোলেন খোদ অভিযোগকারিণী। এরপরই সোমবার রাতে পাটুলি থানার ওসি ওই তরুণীর বাড়ি গিয়ে নতুন করে বয়ান রেকর্ড করেন।
মঙ্গলবার সকালে, ডিসি এসএসডি জানান, আরও তিনটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ৫০৬ ধারায় গালিগালাজ ও হুমকি, ৩২৪ ধারায় কাঁচের বোতল জাতীয় সামগ্রী দিয়ে আঘাত এবং ৪২৭ ধারায় অপরাধ সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে হামলা।
তাৎ‍পর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই ধারাগুলিও জামিনযোগ্য। অথচ, খোদ তরুণী বার বার দাবি করেছেন, আরেকটু হলে তাঁকে হয়ত খুনই করে ফেলা হত। তারপরেও কেন খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা নয়?
স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল মানিকতলা থানার বাগমারি রোডে।  বাড়ি ফেরার পথে তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। এক্ষেত্রেও প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা। তরুণী অভিযোগ করেন, তাঁকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেননি। বার বার বলা সত্বেও সাহায্য করেননি এক পুলিশকর্মী।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হলেও, একদিনের মধ্যেই তারা জামিনে পেয়ে যায়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পাটুলি। পাটুলিতেও ফের প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা।
কাল আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। এই গ্রেফতার এক রাতের লক আপ! অনায়াসেই জামিন পেতে পারে।