কলকাতা: টালা ব্রিজের নকশায় অনুমোদন দিল রেল। পূর্ত দফতরের নকশায় অনুমোদন রেলের। রেলের অনুমতি মেলায় দ্রুত কাজ শেষের সম্ভাবনা। ডিসেম্বরেই রেলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক। তারপরেই পূর্ত দফতরের নকশায় সম্মতি রেলের।


মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরেই শুরু হয় কলকাতার বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ। সেই মতো টালা ব্রিজেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়।


একাধিক জায়গায় ফাটল ধরা পড়ায় পুরনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু তৈরির পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। পরামর্শ মেনে, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি মাঝরাত থেকে টালা ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় ভাঙার কাজ।


বর্তমানে ভাঙার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। টালা ব্রিজ বন্ধ হওয়ায় সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন উত্তর কলকাতা ও উত্তর শহরতলির বাসিন্দারা। ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। অভিযোগ, যে রাস্তা ২০ মিনিটে যাওয়া যেত সেটাই ১ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।


প্রশাসন সূত্রে খবর, কাজে সমন্বয় রাখতে রেল ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি হয়েছে কমিটি। চূড়ান্ত নকশা তৈরি করে পাঠানো হয় রেলের কাছে।


প্রশাসন সূত্রে খবর, নকশা অনুযায়ী টালা ব্রিজ হবে চার লেনের। মাঝেরহাটের ধাঁচে এখানেও কেবল স্টেড রেলওভার ব্রিজ তৈরি হবে। খরচ ধার্য হয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা।


টালা ব্রিজের উদ্বোধন নিয়ে আশাবাদী পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বলেন, পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ২০২১-এর মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।


টালা ব্রিজ কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তথ্য বলছে, ১৯৩৬ সালে চালু হয়েছিল এই সেতু।


কিন্তু, গবেষকদের বক্তব্য, এখন যে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে, তার কাঠামো তৈরি করে উদ্বোধন করা হয় ১৯৬৩ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেনের আমলে।


১৯৭৩ সালের ৫ অক্টোবর টালা সেতুর নতুন নাম হয় ‘হেমন্ত সেতু’। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রয়াত নেতা হেমন্তকুমার বসুর স্মরণে ওই দিন তাঁর ৭৮তম জন্মদিনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় সেতুর নতুন নামকরণ করেন।


যদিও, কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলির বাসিন্দাদের কাছে তা বরাবরই টালা ব্রিজ নামেই পরিচিত থেকে গেছে।


মাঝেরহাট ব্রিজ খুলে যাওয়ার পর এবার কলকাতা ও উত্তর শহরতলীর সংযোগকারী এই ব্রিজের উদ্বোধনের অপেক্ষায় দিন গুণছেন বাসিন্দারা।