কলকাতা:দায়িত্ব নেওয়ার আড়াই মাসের মধ্যে নজিরবিহীনভাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরানো হল রাজীব কুমারকে। তৃণমূলের হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মান্যতা পেল। দাবি বিরোধীদের। কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।


সম্প্রতি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানায় সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি, তিন বিরোধী দলই। এর পাশাপাশি, রাহুল সিংহকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের দুই পুলিশ কর্মীর ঘুষ দেওয়ার ঘটনার নেপথ্যে রাজীব কুমারের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ জানায় বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও রাজ্যে এসে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সরব হন।

বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, স্বরাষ্ট্রসচিবের থেকে দু’বার রিপোর্ট তলব করে কমিশন। সূত্রের দাবি, এরপরই রাজীব কুমারকে সরানোর বিষয়ে একরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল কমিশন। কিন্তু, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগেই পোস্তায় ব্রিজ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে যায়। তার কিছুদিন পরে কলকাতায় ছিল টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল। এই প্রেক্ষাপটে, রাজীব কুমারকে কলকাতা পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত কিছু দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয় বলে কমিশন সূত্রে খবর। সূত্রের এও খবর, এবার রাজীব কুমারকে সরানোর নির্দেশ নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। যিনি এডিজি-সিআইডি পদে ছিলেন।

প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের একাংশের মতে, এ ভাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে কাউকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন।

অতীতে, ভোটের আগে, গৌতম মোহন চক্রবর্তীকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু, সেটা কমিশনের নিয়ম মাফিকই হয়েছিল। কারণ, পুলিশ কমিশনার পদে গৌতম মোহন চক্রবর্তীর টানা তিন বছর হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এর আগে কখনও কোনও পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে সরানো হয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের কাছে বড় ধাক্কা। সেইসঙ্গে তাদের প্রতি অনাস্থাও। কারণ, এবার শুধু রাজীব কুমারকে সরাইয়নি নির্বাচন কমিশন, সেইসঙ্গে সৌমেন মিত্রকেই যে নতুন পুলিশ কমিশনার করতে হবে, তাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। কারণ, হতে পারে, তাদের মনে সন্দেহ ছিল, যে সৌমেন মিত্রর নাম নাও সুপারিশ করতে পারে নবান্ন। তাই সরাসরি তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দিল।