কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: ১৫ বছর বয়স যা পারে, ২০ তা পারবে না কেন?  চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন স্পষ্ট তথ্য শোনা যায় নি ৷ স্কুল খুলল, কলেজ খুলল না! ১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস। শুরু স্কুলে স্কুলে প্রস্তুতি। সরকারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। এক ঘরে সবাইকে বসানো যাবে না। তাও বলা হয়ে গেল। অর্থাৎ, করোনার বিরুদ্ধে সচেতনতাকে সঙ্গী করে স্কুল পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে যাবে, কিন্তু কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া কম্পিউটারে মুখ গুঁজে পড়াশোনা সারবে। পরীক্ষায় বসবে।


অনেকে বলছেন, সিদ্ধান্তের লক্ষণটা রোগের না ওষুধের, সেটাই বোঝা গেল না। কেউ কেউ বলছেন, সিদ্ধান্তটা যতটা বিজ্ঞানের, তার চেয়ে ঢের বেশি কৌশলের। জুনে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক। জুলাইয়ে রাজ্য জয়েন্ট। সামনে বড় বড় পরীক্ষা। এখনও বঙ্গের স্কুলে তুলনামূলকভাবে গোপালের মতো সুবোধের ছড়াছড়ি। পড়ুয়াদের সিলেবাসের বাইরে বড় অংশ জুড়ে মোবাইল। বাকি খানিকটা, খুনসুঁটি- খেলাধুলা থেকে টিফিন কাড়াকাড়ি! তা ছাড়া আর আছেটা কি! অথচ কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় মানেই রাজনীতি কিংবা মুক্ত চিন্তা। আড্ডা, তর্ক থেকে উপাচার্য, অধ্যক্ষকে ঘেরাও। কেউ সরকারের পক্ষে, কেউ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ বলছেন, অহেতুক ভোটের আগে ক্যাম্পাস গরম করে কী লাভ ! তাছাড়া ক্যাম্পাসে থাকলে ভোটের কাজের কি হবে? অতএব গেট বন্ধেই মধুরেণ সমাপয়েৎ।


উপাচার্যরা বলছেন, হস্টেলে এক ঘরে একাধিক পড়য়া। চিন্তার বিষয়! হস্টেল খোলাই যাবে না! এ যাত্রায় না হয় একটা পুচকে ভাইরাসের মোকাবিলা করা গেল, কিন্তু বৈষম্যের কী হবে? রোহিত ভেমুলা কে কি এত তাড়াতাড়ি আমরা ভুলতে পারি ! ট্রেন চলছে। রাজনৈতিক সভাগুলিতে গিজগিজে ভিড়। সিনেমা হলে একশো শতাংশ দর্শক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজোতেও আপত্তি নেই । তাহলে হস্টেল কি দোষ করল? বখাটে ছেলেগুলোকে কে বোঝাবে? উদয়ন পন্ডিতের শিষ্যরা আজ মাইনোরিটি। গণতন্ত্রে সংখ্যাই শেষ কথা। অতএব, সামনে ভোট। সেমিস্টারের চেয়েও বড় পরীক্ষা। ক্যাম্পাসে কেন, রাস্তায় থাকতে হবে!!