কলকাতা: ৩ নম্বর লোয়ার রডন স্ট্রিটের ফ্ল্যাট। ঘরে ঢোকার মুখেই ডান হাতে তামার প্লেটের ওপর বড় বড় করে কালো হরফে লেখা সোমেন মিত্র। ব্র্যাকেটে এমপি। তার নীচেই রয়েছে শিখা মিত্রের নাম। ব্র্যাকেটে লেখা এমলএ। আর একেবারে শেষে লেখা রয়েছে মিস্টার রোহন মিত্র। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটাই ছিল প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির নিবাস। শিয়ালদা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বিধান ভবনের পর ‘ছোড়দা’-র নিভৃত নিবাস ছিল ৩ নম্বর লোয়ার রডন স্ট্রিটের এই ফ্ল্যাট। আজ এখানে জন সমাগম হয়েছে ঠিকই, তবে রয়েছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। বাড়ির বড় কর্তাই তো আর নেই। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৭৮।



ডাকাবুকো এই প্রবীন নেতার প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন কংগ্রেস হাইকমান্ড সনিয়া গাঁধী। ট্যুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও। শোকজ্ঞাপন করে ট্যুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সোমেন মিত্রের একসময়ের ‘সতীর্থ’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের জোটপন্থী নেতার প্রয়াণে ব্যথিত বাম শিবিরও।


আরও পড়ুন: সোমেন বাবুর প্রয়োজন ছিল, তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী জোট তৈরিতে সমস্যাই হল: বিমান


আবেগ বিহ্বল সোমেন মিত্রের স্ত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক শিখা মিত্রও। সোমেনকে হারিয়ে শিখা কার্যত আক্ষেপের সুরেই বলেন, ফের রাজনীতি করতে দেওয়াই ভুল হয়েছে! মৃদু গলায় দলের প্রতিও ‘ক্ষোভ’-ও উগড়ে দিয়েছেন সোমেন-পত্নী। শিখা মিত্র বলেন, “দাদা নিজেও জানতেন না তাঁকে প্রেসিডেন্ট করা হবে। এবিপি আনন্দতেই প্রথম শুনেছিলাম। খুব খুশি হয়েছিলাম। উঁনি রাজনীতি করতে ভালবাসতেন। নিজে পদ চাননি। সেকারণেই সনিয়া গাঁধীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম।  ছেলে বলেছিল, মাম্মি বুয়াকে আর রাজনীতি করতে দিও না। এখন, মনে হচ্ছে সেটাই ভুল হল”।


শিখার বক্তব্য, সম্প্রতি রাজ্যের কিছু নেতাদের কথায় কষ্ট পেয়েছেন সোমেন মিত্র। সহ্য করতে পারতেন না। অনেক চাপ বেড়ে গিয়েছিল। রাজনীতিতে না ‘ফিরলে’ হয়ত এই চাপটা হত না, আক্ষেপ শিখা মিত্রের।