কলকাতা: সনিকা মৃত্যু-তদন্তে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শেষমেশ, যুক্ত হল ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা।
মঙ্গলবার, আলিপুর আদালতে, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারা প্রয়োগের আর্জি জানায় কলকাতা পুলিশ। আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করে। লালবাজার সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার আগে, অভিনেতা বিক্রম এবং সনিকা সিংহ চৌহান যে হোটেলের পানশালায় ছিলেন, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ তারা খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি, ওই পানশালার কর্মীদের বয়ান থেকে শুরু করে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান, পার্টিতে থাকা সনিকার বন্ধুদের আদালতের কাছে দেওয়া জবানবন্দি, গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রাথমিক রিপোর্ট, প্রাথমিক ফরেন্সিক রিপোর্ট, সবই অভিনেতা বিক্রমের বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। তাদের এও বক্তব্য, দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে বিক্রমের গাড়ির গতিবেগও ছিল অনেক বেশি-- ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার।
সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, চারজন বন্ধুর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বিক্রমের বিরুদ্ধে বলেছে। বলেছে বিভিন্ন বারে গিয়েছিল। ফরেন্সিকের রিপোর্ট এসেছে। বিক্রমের বিরুদ্ধে গিয়েছে। দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে গতিবেগ ছিল ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার।
গত ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে রাসবিহারী মোড়ের কাছে এই জায়গাতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি। এতে, গাড়িতে থাকা মডেল সনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যু হয়। কিন্তু, এই ঘটনায় বিক্রমের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রথমে ৩০৪-এ ধারায় গাফিলতির জেরে মৃত্যু, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো এবং সম্পত্তি নষ্টের মতো জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়।
এ নিয়ে নানা মহল সমালোচনায় সরব হয়। প্রশ্ন তোলে, অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় এবং শিল্পী কালিকাপ্রসাদের গাড়ির চালক অর্ণব রাও, দু’জনের ক্ষেত্রে দু’রকম আইন কেন?
শেষমেশ এ বার অভিনেতা বিক্রমের বিরুদ্ধেও ৩০৪-এ ধারার জায়গায় ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা যুক্ত হল। সরকারি আইনজীবী বলেন, আগে বিক্রমের বিরুদ্ধে এত তথ্য প্রমাণ মেলেনি। তাই তখন ৩০৪ দেওয়া হয়নি।
তাহলে এই পরিস্থিতিতে কী কী হতে পারে? আইনজীবী মহলের বক্তব্য, পুলিশ এখন যে কোনও মুহূর্তে অভিনেতা বিক্রমকে গ্রেফতার করতে পারে। বিক্রম উচ্চ আদালতে গিয়ে আগাম জামিনের আর্জি জানাতে পারেন। অথবা এখন যে আদালতে মামলা চলছে, সেখানে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আর্জি জানাতে পারেন বিক্রম।
এদিকে, সনিকা সিংহ চৌহানের পরিবারের প্রতিক্রিয়া, আমরা প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম সত্যিটা সামনে আসুক। এটা সেদিকেই একটি পদক্ষেপ। লালবাজার সূত্রে খবর, রক্ত-সহ যে সব রিপোর্ট পাওয়া এখনও বাকি, সে সব যদি বিক্রমের বিরুদ্ধে যায়, তা হলে আগামী দিনে তাঁর বিরুদ্ধে আরও কড়া ধারা যুক্ত করা হতে পারে।