কলকাতা:  আইন কলেজে আইন ভঙ্গ। আইন ভেঙে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিলেন আইন কলেজেরই পড়ুয়ারা। ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল সাউথ ক্যালকাটা ল-কলেজ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করে ছাত্রদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। কলেজে তাণ্ডবের পরেই অধ্যক্ষকে ফোন শিক্ষামন্ত্রীর। দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের নির্দেশ। গ্রেফতার করতে নির্দেশ পুলিশকে। ভাঙা হবে টিএমসিপির ইউনিট। জানালেন পার্থ।


শুক্রবার সকাল থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি গোষ্ঠীর তাণ্ডবে উত্তাল ছিল গড়িয়াহাটের সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ। ভাঙা হয় প্রিন্সিপালের নাম লেখা প্লেট। ভাঙা হয়েছে অধ্যক্ষের ঘরের জানলা। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে লাগানো সিসিটিভি মাটিতে গড়াগড়ি খেতে দেখা গিয়েছে। কলেজ কার্যত তছনছ করা হয়েছে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের দাবি, অধ্যক্ষ তাঁদের কোনও কথা শোনেন না। তাই না কি এ ভাবে তাণ্ডব চালাতে বাধ্য হয়েছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, আসলে গল্পটা অন্য। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল আসলে টাকার ভাগ নিয়ে। ২০১৬ সাল থেকে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের সাধারণ সম্পাদক হন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আপন সাহা। কিন্তু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অপর একটি গোষ্ঠী তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে সাত্যকী দত্তকে সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করতে চায়। যাতে সিলমোহর দেয় কর্তৃপক্ষ।

এই পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এরই মাঝে এ দিন তুলকালাম কলেজে। কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন সাধারণ সম্পাদক আসার পরেই

নবীনবরণ বাবদ তাদের থেকে ২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা চাওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ দেয় ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

এরপর আবার, খেলার সরঞ্জাম কেনার জন্য দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয় ছাত্র সংসদের তরফে। এই টাকা এখনও দেওয়া হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ সূত্রে দাবি। অভিযোগ, এই সব টাকার ভাগ কে নেবে, মূলত তা নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল চলছে।

সূত্রের দাবি, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যে গোষ্ঠী এ দিন তাণ্ডব চালিয়েছে, তাদের মাথায় হাত রয়েছে রাজ্যের এক মন্ত্রীর। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য গোটা ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কলেজে টিএমসিপির ইউনিট ভেঙে দেওয়া হবে। অধ্যক্ষকে বলেছি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে। যাঁরা দোষী তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের পতাকা নিয়ে যাঁরা এ সব কাজ করছে তাঁদের বরদাস্ত করা হবে না।

আগামী ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে রাজ্য সরকারের তৈরি করা নতুন বিধি অনুযায়ী। যাতে বলা হয়েছে, ছাত্র সংসদের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হবে, তার দায়িত্বে থাকবেন একজন অধ্যাপক। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা আগেভাগেই এই ব্যবস্থা চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। আর তাই, অর্থই হয়ে উঠল অনর্থ।