কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঘাযতীনের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে।


পরিবারের দাবি, পেটের সমস্যা নিয়ে ১২ তারিখ রোগীকে ভর্তি করা হয়। রেড প্লাস সোসাইটি নার্সিংহোমে। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের জানানো হয়, রোগীর অস্ত্রোপচার হলে তবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করা যাবে। না হলে নয়।


নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া রেটে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে রোগীকে ভর্তি নেওয়া ভুল হয়েছে বলে দাবি করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন নার্সিংহোমের কর্ণধার।


গত সোমবারই সোমবার রানাঘাটের সভা থেকে স্বাস্থ্যসাথী ফের সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। কোনও হাসপাতাল চিকিৎসা করতে রাজি না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।


রাজ্যের সমস্ত মানুষকেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতেও সবথেকে বেশি সাড়া ফেলেছে এই প্রকল্প।


কিন্তু অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সব বেসরকারি হাসপাতালে নিখরচায় এই পরিষেবা মিলবে তো? সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলি দাবি করেছিল, সবাইকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধে দিতে হলে রেট বাড়াতে হবে। ৩০ দিনের মধ্যে বকেয়া মেটাতে হবে বলেও দাবি করে তারা।


এই প্রেক্ষাপটে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত কড়াভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রোগী ফেরালে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলেন, গরীব মানুষকে বদমায়েশি করে হেনস্তা করার চেষ্টা করবেন না। যদি হেনস্তা করে, থানায় গিয়ে এফআইআর করবেন।


কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত, না রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী? কোন প্রকল্প ভাল? কার প্রকল্পে সাধারণ মানুষের বেশি লাভ?


ভোটের আগে তা নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য কাজিয়া তুঙ্গে। একদিকে নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডারা বাংলায় এসে বারবার দাবি করছেন, আয়ুষ্মান ভারত চালু না হওয়ায় রাজ্যবাসী বঞ্চত হচ্ছেন। সোমবার রানাঘাটের সভা থেকে তার পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, কীসের আয়ুষ্মান? ওরা ৬০ পার্সেন্ট দেবে আর আপনাদের ৪০ পার্সেন্ট দিতে হবে। আর স্বাস্থ্যসাথী পুরোটাই সরকার দেবে। কোনটা ভাল?


কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে নথিভুক্ত পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পাবে। এর জন্য কোনও প্রিমিয়াম দিতে হবে না ওই পরিবারকে। সরকারি ও নির্ধারিত বেসরকারি হাসপাতালে ‘ক্যাশলেস’ সুবিধা মিলবে।


অন্যদিকে, রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেও পরিবারপিছু বছরে ৫ লক্ষ টাকার কভারেজ পাওয়া যায়। সরকারি ও নির্ধারিত বেসরকারি হাসপাতালে ‘ক্যাশলেস’ সুবিধা মেলে।


এই তালিকায় রয়েছে এইমস এবং ভেলোরের ক্রিশ্চান মেডিক্যাল হসপিটালও। আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধা পেতে ৩০ টাকা দিয়ে একটি প্রিন্ট আউট নিতে হয়।


স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বিনামূল্যে একটি স্মার্টকার্ড দেওয়া হয়, যা দেখালে সুবিধা মেলে।