কলকাতা: শুক্রবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিজেপির সভা থেকে তৃণমূলকে নিশানা করেছিলেন মুকুল রায়। সোমবার সেই জায়গায় সভা করে মুকুলকে জবাব দিল তৃণমূল।
আর মুকুলকে আক্রমণের দায়িত্বটা হাতে তুলে নেন তাঁরই এলাকা কাঁচরাপাড়ার পার্শ্ববর্তী ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ। এদিন তিনি বলেন, মুকুল রায়, আপনাকে গদ্দার ছাড়া কিছুই বলা যায় না। আপনি কালীদাস। যে ডালে বসে আছেন, সেই ডাল কাটছেন।
এদিন মুকুলকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে অর্জুন সিংহ জানান, কাউন্সিলর ভোটেও তিনি মুকুলকে হারিয়ে দেবেন। বলেন, কাউন্সিলর ভোটে দাঁড়ান। যাকে চাইবেন দাঁড় করাব। হারিয়ে দেব। অর্জুনের দাবি, মুকুল বলেছেন, ৭৭ হাজার বুথে নাকি লোক আছে। আমি বলছি, কাঁচরাপাড়ার বুথের ৭টা এজেন্টের নাম বলে দিন।
শুক্রবার বিজেপির সভা থেকে দিলীপ ঘোষ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মুকুলের দল ভাঙানোর ক্ষমতাকে তাঁরা তৃণমূল ভাঙাতে কাজে লাগাতে চান। বলেছিলেন, আপনাদের কোচ আমার সঙ্গে। জেলায় জেলায় যাব, তৃণমূলকে শুইয়ে দেব। যার শিল, যার নোড়া, তারই ভাঙি দাঁতের গোড়া।
পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল। এদিন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, নতুন কোচ পেয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। কোচকে অবশ্য চাটনিও বলছে। যারা বদলের কথা বলছে, তাদের চরিত্রই বদল হয়ে গেছে। ২০১৯ দূরে থাক, কেউ কিছু করতে পারবে না। আগামী দিন আইন বুঝিয়ে দেবে, কোথায় কার থাকার কথা।
পুরনো দলের একাধিক নেতা-নেত্রী তাঁকে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপে ভরিয়ে দিলেও, মুকুল রায় এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আর রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারাও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হয়নি।
আর উল্টোদিকে যুব তৃণমূলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমরাও কৌশলে মুকুলকে সরাসরি আক্রমণের রাস্তয় হাঁটেননি। ২০২১-এ বাংলায় পরিবর্তন প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, আগে মানুষের পাশে থাকুন, তারপর পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখবেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব সম্ভবত কৌশলেই মুকুলকে সরাসরি আক্রমণের রাস্তায় হাঁটল না। কারণ, তাহলে তাঁকে প্রকাশ্যে গুরুত্ব দেওয়া হত। তৃণমূল সম্ভবত এটাই বোঝানোর চেষ্টা করল, যে মুকুলকে জবাব দিতে অর্জুন সিংহর মতো জেলার নেতাই যথেষ্ট।