শুক্রবার তৃণমূল কাউন্সিলরদের একটি কর্মশালায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতেই বলেন,
আমি সব খবর জানি। বলে দিলে হাঁড়ি ফাঁস হয়ে যাবে। শেষবার সতর্ক করছি। এবার কিন্তু, কাজে করে দেখাব। মানুষের ভোট নিয়ে ভাবুন, নোট নিয়ে নয়। যারা নোটের জন্য ভাবছেন তাদের শর্ট টার্মে চলে যেতে হবে। করে খাবেন নাকি লং ট্রামে থাকবেন। যারা দু’বছর করে খাওয়ার কথা ভাবছেন, তাদের দল, আইন, সমাজ কেউ ছাড়বে না।
এদিন একেবারে পুরসভা ধরে ধরে কাউন্সিলরদের তীব্র ভৎর্সনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তৃণমূলনেত্রী ফেরেন বিধাননগরের কাউন্সিলরদের দিকে।
বলেন, এখানে ডেঙ্গির দাপট কেন? বাইরে থেকে লোক এনে এলাকা পরিষ্কার করাতে হচ্ছে। লজ্জা করে না? সিন্ডিকেট করার সময় মনে থাকে না? সারা রাজ্যের লোক সিন্ডিকেট শিখেছে আপনাদের কাছ থেকে। আপনাদের একজন জেলে রয়েছেন। আপনাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।
তৃণমূলনেত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভাও। সেখানকার কাউন্সিলরদের উদ্দেশে তিনি কড়া বার্তা দেন,
দু’জন কাউন্সিলর কোনও কোনও কাজের জন্য নাকি ৩০-৪০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আমি কারও নাম করছি না। এবার ডানা ছেঁটে দেব।
দলে কোনও দুর্নীতি যে তিনি বরদাস্ত করবেন না...
সেটা বোঝাতে তৃণমূলনেত্রীর বার্তা,
দলের সম্মান না থাকলে, ব্যক্তিগতভাবে টাকা পকেটে পুরে লাভ হয় না। নিজে দুর্নীতি করবেন না। অন্যকেও করতে দেবেন না। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করাই প্রথম ও শেষ কথা।
তৃণমূলনেত্রীর আরও বার্তা,
মিনিমাম প্রয়োজন নিয়ে থাকুন। এভাবে কেউ চললে কিছু বলি না। ম্যাক্সিমাম করতে গেলেই দলের নজরে পড়বে। এবং দল ব্যবস্থা নেবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, জুলুমবাজি, নির্মাণকাজ নিয়ে সিন্ডিকেট-রাজ, জলাজমি-পুকুর ভরাট করে প্রোমোটিং সহ নানা ক্ষেত্রে তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ যুক্ত বলে নানা সময়ে দলের শীর্ষস্তরে অভিযোগ আসছে। যা দলের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করে, এমন কোনও কাজের সঙ্গে কাউন্সিলররা কেউ যুক্ত থাকলে, তিনি যে রেয়াত করবেন না, এদিন রাজ্যের সব দলীয় কাউন্সিলরদের বৈঠকে ডেকে সেব্যাপারেই তাঁর চরম হুঁশিয়ারির কথা শোনালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।