কলকাতা: বাইরে উন্মত্ত রোগীর পরিজনরা।ভিতরে মারমুখী মেজাজে জুনিয়র ডাক্তাররা।

যাদের হাতে স্টেথো থাকার কথা, তাদের হাতেই লাঠি!সোমবার রাতভর এইসব দৃশ্যের সাক্ষী থাকল রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম! কিন্তু কেন এভাবে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল এসএসকেএম চত্ত্বর? ঘটনার সূত্রপাত, এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।

 

হাসপাতাল সূত্রে খবর,রবিবার জ্বর নিয়ে ভর্তি হন বছর তিরিশের অশোক রামকে। পরিবারের দাবি, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ জানানো হয়, মৃত্যু হয়েছে অশোকের।

অভিযোগ, এরপরই চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে, মৃতের আত্মীয়রা ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করেন। পাল্টা জুনিয়র ডাক্তাররাও রোগীর আত্মীয়দের মারধর করেন বলে অভিযোগ।

 

মৃতের তিন আত্মীয়কে ওয়ার্ডে আটকে রাখার অভিযোগ ঘিরে রাত ১২টা নাগাদ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এসএসকেএম চত্ত্বর।

হাসপাতালের বাইরে কিছুক্ষণের জন্য পথ অবরোধ করেন রোগীর আত্মীয়রা। পরিস্থিতি সামলাতে এসএসকেএমে পৌঁছন ডিসি সাউথ। আটক তিনজকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে তৃণমূল মদতপুষ্ট দালালরাও ছিল।

 

জুনিয়র ডাক্তার সুজন ঘোষের অভিযোগ, যারা আমাদের মেরেছে তাদের মধ্যে তৃণমূল আশ্রিত দালাল ছিল। হাসপাতালে দালাল চক্র ভরে গিয়েছে। ডিরেক্টরের ঘরের বাইরে দালালদের ঘর। ওই ঘর বন্ধ করতে হবে। দালালদের জন্য রোগীরা বেড রাচ্ছে না। দালালদের জন্য আমরা মার খাচ্ছি।

 

সোমবার রাতের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভবানীপুর থানায় দুটি অভিযোগ জমা পড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, শুভঙ্কর দাস, সঞ্জয় দাস, রামরতন রায় নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা, মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

 

এদিন ধৃত তিনজনকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে, ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন বিচারক।

 

মৃত রোগীর পরিবারের তরফে দায়ের করা অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে, কৌস্তভ মাইতি, সুজন ঘোষ, সৈকত মণ্ডল, কৌস্তভ বিশ্বাস, রোহন ঘোষ নামে পাঁচ জুনিয়র চিকিৎসকের।

রাতের এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবারও থমথমে ছিল এসএসকেএম চত্ত্বর।

মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।