কলকাতা: ছাত্র আন্দোলনের ঝোড়ো হাওয়ায় উত্থান। মাঝে আত্মগোপন তারপর হাজতবাস। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পরে বিধানসভার সদস্য, পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী। সিপিএম জমানায় বাংলা থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ। একই সঙ্গে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতা। দীর্ঘ ছয় দশক ধরে চলা এই ‘শ্যামল অধ্যায়ের সমাপতন’ হল বৃহস্পতিবার। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পিয়ারলেসে আমরণ লড়াই চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ‘হারলেন’ শ্যামল চক্রবর্তী।
বন্ধু বিয়োগে কাতর বিমান বসু। দীনেশ মজুমদার, সুভাষ চক্রবর্তীকে আগেই হারিয়েছেন, এবার শ্যামলকেও ‘বিদায় বন্ধু’ বলতে হল তাঁকে। আলিমুদ্দিনের বৈঠকী আড্ডায় যে আর প্রিয় শ্যামলকে পাবেন না, ভেবেই চোখ ছলছল পক্ককেশ পলিটব্যুরোর।
পড়ুন: ‘নিষ্ঠাবান কমিউনিস্ট ছিলেন’, শ্যামল চক্রবর্তীর প্রয়াণে মর্মাহত সুব্রত মুখোপাধ্যায়
“শ্যামল শুধু ছাত্র-শ্রমিক-গণ আন্দোলনের নেতা ছিলেন না। সুলেখক ও সুবক্তাও ছিলেন। কমরেড দীনেশ মজুমদার, সুভাষ চক্রবর্তী, শ্যামল আর আমি বরাবরই ঘনিষ্ঠ ছিলাম। শ্যামলের কথাবার্তার কারণেই হোক আর ওঁর আচার আচরণেই হোক, শ্যামলকে আমার মা খুব পছন্দ করতেন”, শ্যামল স্মৃতিতে বলেন বিমান।
৬ অগাস্ট বেলা ১টা বেজে ৫০ মিনিটে প্রয়াত হন বর্ষীয়ান বাম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। বার্ধক্যজনিত কারণ ও কিডনির সমস্যা নিয়ে ৩০ জুলাই পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল তিনি। বুধবার হাসপাতাল থেকে মেয়ে ঊষসী চক্রবর্তীকে বলা হয়েছিল, শ্যামলবাবু চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আজ ‘শ্রীময়ী-র’ শ্যুটিংয়ে যাওয়ার পর হাসপাতালের ফোনে ঊষসী জানতে পারেন শ্যামল চক্রবর্তীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে এবং তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে শ্যামল চক্রবর্তীর দেহ পরিবারকে দেওয়া হবে না। পিয়ারলেসের তরফে শব হস্তান্তর করা হবে কলকাতা কর্পোরেশনকে। তবে শ্মশান পর্যন্ত শ্যামল চক্রবর্তীর শবদেহর ওপর থাকবে ‘লাল পতাকা’। মেডিক্যাল কলেজে দেহদান করা থাকলেও তাঁর শেষকৃত্য হবে কোভিড প্রোটোকল মেনেই।