কলকাতা: বসিরহাটকাণ্ড নিয়ে বিজেপি যখন তৃণমূল সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ তৈরির কৌশল নিচ্ছে, তখন সব অশান্তির দায় পদ্ম শিবিরের ওপরই চাপালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি তুললেন অসহযোগিতার অভিযোগ। নিশানা করলেন বিজেপিকে।

শনিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার অসহযোগিতামূলক মনোভাব দেখাচ্ছে। পরিকল্পনামাফিক ও ইন্ধন দিয়ে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। কিছু বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে। বিজেপির পার্টি অফিস থেকে দেখানো হচ্ছে। কুমিল্লার ভিডিও রেকর্ডিং দিয়ে প্রচার। ফেসবুকের নামে ফেকবুক চলছে। ভোজপুরি সিনেমা নিয়ে প্রচার চলছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সবেতেই বিজেপির হাত দেখেন। অভিযোগ করাটাই ওনার কাজ। পাহাড় থেকে বসিরহাট, সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী সরকারগুলির ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে বিজেপি। রাজনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করে সুপার ইমার্জেন্সি চালানো হচ্ছে। দাঙ্গা করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নষ্টের চেষ্টা। নোটবন্দি থেকে জিএসটি, এটা জেলবন্দি করে দিয়েছে। দুর্নীতির পাহাড়। যেই মুখ খুলছে তার পিছনে লাগছে। কংগ্রেসকে হেরাল্ড। লালুকে, ডিএমকে, কেজরিওয়ালকে। চাপ দিয়ে মুখ বন্ধ। তৃণমূলকে করুক উই ডোন্ট মাইন্ড। ২০১৯ সালে বিদেয় হবে। নোটবন্দি থেকে জেল বন্দি, বিজেপির বিনাশ।

যদিও বিজেপির দাবি, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে মরিয়া হয়ে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে তৃণমূল। এদিন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসিরহাটে ঢোকার চেষ্টা করে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। ১৪৪ ধারার যুক্তি দেখিয়ে বিরাটির কাছে মাইকেল নগরে তাদের আটকায় পুলিশ। যা ঘিরে তুমুল বচসা শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে। এরপর মীনাক্ষী লেখি, সত্যপাল সিংহ এবং ওম মাথুরকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মুক্তি পান বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। যদিও তাঁদের এই সফরের যৌক্তিক্ততা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, আমাদের এতগুলো এমপি। তৃণমূলের কে বসিরহাটে গিয়েছে?

তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে এদিন সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি। এরপর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আর্জি জানিয়ে, রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দেয় তারা। হাজরা মোড়ে সাদা পায়রা উড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা দেয় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন।