কলকাতা: পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালী সহ ‘পদ্মাবতী’-র গোটা টিম পশ্চিবঙ্গে স্বাগত। এখানে ছবির প্রিমিয়ার ও মুক্তির বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


বিগত কয়েকমাস ধরেই দেশজুড়ে চলছে পদ্মাবতী-বিতর্ক। এই প্রেক্ষিতে, শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি তাঁরা (বনশালী ও প্রযোজক) পদ্মাবতীকে অন্য কোনও রাজ্যে মুক্তি না করাতে পারেন, তাহলে আমরা এরাজ্যে বিশেষ ব্যবস্থা করব। এর জন্য বাংলা খুশি এবং গর্বিত অনুভব করবে। আমরা সবকিছুর দায়িত্ব নেব। সঞ্জয় লীলা বনশালী ও তাঁর গোটা টিম আমাদের রাজ্যে স্বাগত।


বস্তুত, এক-এক করে দেশের বিভিন্ন বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে পদ্মাবতী-মুক্তির ওপর জারি হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা। সোমবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান জানিয়ে দেন, তাঁর রাজ্যে ছবিটি মুক্তি পাবে না। বুধবার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর রাজ্যেও এই ছবি মুক্তি পাবে না।


পাশাপাশি, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংহ বাদলও জানান, তিনি আন্দোলনকারীদের সমর্থন করছেন। ছবি মুক্তি হলে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। ছবি মুক্তির ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে অনুরোধ করেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা তথা বিধায়ক দেবেন্দ্র রাণা।


সেই দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের মন্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে, এই প্রথমবার নয়। এর আগেও পদ্মাবতী-বিতর্কে ছবির নির্মাতাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকদিন আগেই, টুইটারে মমতা জানিয়েছিলেন, ছবি ঘিরে এই বিতর্ক শুধুমাত্র হতাশাজনক নয়। দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ‘সুকৌশলে’ ধ্বংস করাই হল আসল পরিকল্পনা। আমরা এই সুপার-এমার্জেন্সির নিন্দা করছি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সকলের এগিয়ে এসে এক সুরে প্রতিবাদ করা উচিত।


https://twitter.com/MamataOfficial/status/932496407730126848

প্রসঙ্গত, রণবীর সিংহ, দীপিকা পাড়ুকোন ও শহীদ কপূর অভিনীত এই ছবিটি আগামী ১ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, গত সপ্তাহে তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ছবির নির্মাতা সংস্থা। ছবির প্রেক্ষাপট রাজপুত রানি ‘পদ্মিনী’-কে ঘিরে।


ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে আপত্তি থাকায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সামিল হয়েছে বিভিন্ন রাজপুত, দক্ষিণপন্থী ও রাজনৈতিক সংগঠন। সেই শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই বিভিন্ন সময় থেকেই সংগঠনগুলির নিশানায় রয়েছে পদ্মাবতী। তাদের দাবি, ছবিতে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে।