কলকাতা: তোলা না দেওয়ায় মধ্যমগ্রামে টিএমসিপি নেত্রী ও তাঁর মা-কে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ। অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পুলিশকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের। যদিও সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল ও অভিযুক্ত ক্লাব।
অভিযোগ, তোলা দিতে অস্বীকার করায় এই টিএমসিপি নেত্রী ও তাঁর মাকে ক্লাবে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছিল তৃণমূলের লোকজন, উঠেছে শ্লীলতাহানির অভিযোগও। মধ্যমগ্রামের এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে পুলিশকে তিরস্কার করল কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার পুলিশ কেস ডায়েরি ও অন্যান্য নথি পেশ করে। কিন্তু দেখা যায়, অভিযোগকারিণীদেরই গোপন জবানবন্দি নেয়নি পুলিশ! এফআইআরে তোলাবাজির ধারাও যুক্ত করা হয়নি!
কেস ডায়েরি দেখে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। বলেন, উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের প্রশ্রয় ছাড়া, অধস্তন পুলিশকর্মীরা এই কাজ করতে পারেন না। আদালত বারবার নির্দেশ দিয়েছিল, অভিযোগপত্রের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে উপযুক্ত ধারা এফআইআরে নথিভূক্ত করতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ আপনারা (পুলিশ) মানছেন না কেন? নিজেদের মতো আইন প্রণয়ন করে কাজ চালাচ্ছেন? কেন আপনারা গোপন জবানবন্দি নেননি?
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তদন্তকারী অফিসার এবং ওসি-র বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, তাও জানতে চায় আদালত। সরকারি আইনজীবী বলার চেষ্টা করেন, প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, আক্রান্তদের কিছু নেওয়া হয়নি।
এতে আরও ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। বলেন, আপনারা প্রতিবেশীদের কথা বিশ্বাস করছেন, অথচ আক্রান্তদের অবিশ্বাস করছেন!
সরকারি আইনজীবী সওয়াল করেন, ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১১ জন নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছে। এরপরই রিপোর্ট দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় আদালত।
মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে জেলার পুলিশ সুপারকে রিপোর্ট দিতে হবে। জানাতে হবে, তদন্তের অগ্রগতি।  তদন্তকারী অফিসার ও ওসির- বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন।
যদিও, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পাল্টা মা ও মেয়েকে কাঠগড়ায় তুলেছে অভিযুক্ত ক্লাব। ঘটনার জেরে এখনও আতঙ্কে অভিযোগকারিণীরা।
এই প্রেক্ষিতে বিচারপতির নির্দেশ, মামলাকারীর পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। অভিযোগকারিণীরদের যদি শারিরীক বা মানসিক ক্ষতি হয়, তার দায়ও পুলিশ সুপারের ওপর বর্তাবে।
সে ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদালত।