অন্টারিও: ব্যস্ততার মধ্যে ছেলে সামলানো সহজ নয়। তাই নিশ্চিন্তে ডে কেয়ারে একরত্তিকে রেখে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কিন্তু তাতেই মারাত্মক ঘটনা ঘটে যায়। সুইমিং পুল থেকে ঠান্ডা-শীতল, নিথর দেহ উদ্ধার হয়। নয় নয় করে প্রায় তিন ঘণ্টা স্তব্ধ ছিল হৃদযন্ত্র। কিন্তু তার পরও অত্যাশ্চর্য ভাবে একরত্তির শরীরে প্রাণ ফেরানো সম্ভব হল (Child Survives Death)।


নিশ্চিন্তে ডে কেয়ারে একরত্তিকে রেখে গিয়েছিলেন মা-বাবা


কানাডার অন্টারিও-তে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গিয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি মাত্র ২০ মাস বয়সি ওয়েলন সন্ডার্সকে ডে কেয়ারে রেখে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কিন্তু কোনও ভাবে ডে কেয়ারের পিছনের সুইমিং পুলে পড়ে যায় একরত্তি শিশুটি। প্রায় মিনিট পাঁচেক খুঁজেই পাওয়া যায়নি তাকে। দমকল এসে যখন সুইমিং পুল থেকে উদ্ধার করে তাকে, ছোট্ট শরীরটি শীতল এবং নিথর হয়ে গিয়েছে (Miracle Child)।


আশা নেই ধরে নিয়েও ওয়েলনকে শার্লট এলেনর এঙ্গেলহার্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখানেই অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করেন চিকিৎসক এবং হাসপাতালের কর্মীরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রায় নেই। কিন্তু একরত্তির জন্য ওই দিন ঝাঁপিয়ে পড়েন চিকিৎসক থেকে নার্স, ল্যাবের কর্মী থেকে ওয়ার্ড বয়।



কানাডার সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা তিন ঘণ্টা ধরে শিশুটিকে CPR দেওয়া হয়। ঘরের মধ্যে পোর্টেবল হিটার ধরে দাঁড়িয়েছিলেন ল্যাবের কর্মীরা। মাইক্রোওয়েভে জল গরম করে এগিয়ে দিচ্ছিলেন নার্সরা। অন্য দিকে, ফোনে লন্ডনের বড় হাসপাতালের সঙ্গে লাগাতার ফোনে শলা-পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছিলেন কর্মীরা। তাতেই একরত্তির শরীরে প্রাণ ফেরানো সম্ভব হয়।


এর পর বেশ কিছুদিন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে হাসপাতালেই ছিল ওয়েলন। শেষ মেশ ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। আপাতত পুরোপুরি সুস্থ সে। বাড়িতেই রয়েছে। বাড়ির লোকজন এখন তাকে নিয়েই ব্যস্ত। এক মুহূর্তের জন্য কাছছাড়া করছেন না কেউ। তবে এই সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে নারাজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, সকলে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেই অসম্ভবকে সম্ভব করা গিয়েছে।


ওয়েলনের এই বেঁচে ফেরার ঘটনা মুখেমুখে ছড়িয়ে পড়েছে কানাডায়। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে খবর। তাতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এ ভাবেও ফিরে আসা যায়, একরত্তির বেঁচে ফেরাকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করছেন অনেকে।