কলকাতা: করোনাভাইরাস যত ছড়াচ্ছে, তত বিভিন্ন অপ্রচলিত জায়গা থেকে ওষুধের সন্ধান করছেন গবেষকরা। তাঁরা বলছেন, গাঁজা ও ভাংয়ের মধ্যে এমন বেশ কিছু সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা করোনা সংক্রমণের চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে। এখন তাঁরা চেষ্টা করছেন, এটি থেকে সংক্রমণ নিরোধক কোনও ওষুধ বার করা যায় কিনা।


আমেরিকার নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সাস বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এখন গাঁজা-ভাং নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন, বোঝার চেষ্টা করছেন, গাঁজা-ভাং থেকে তৈরি ওষুধ করোনার বিপজ্জনক ফুসফুসে সংক্রমণের চিকিৎসা করতে পারে কিনা। এ নিয়ে এ মাসের ব্রেন, বিহেভিয়র অ্যান্ড ইমিউনিটি পত্রিকায় তাঁরা একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। তাতে তাঁরা বলেছেন, সাম্প্রতিক কিছু রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, জ্বর, কাশি ও পেশিতে যন্ত্রণা সংক্রান্ত অসুস্থতার লক্ষণ শেষমেষ মারাত্মক নিউমোনিয়ার চেহারা নিতে পারে, যা ফুসফুসের কাজ বন্ধ করে দিতে পারে, দম নেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে এর ফলে। তাই বিজ্ঞানীদের এখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম কাজ শরীরের প্রদাহ বা জ্বালাযন্ত্রণা কমানো।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক এক স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, টোসিলিজুমাব নামে এমনই একটি ওষুধ রোগীদের ফুসফুসের শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে পারে, এর ফলে ৯০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু সমস্যা হল, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যন্ত বেশি, অগ্ন্যাশয় এবং হৃদপিণ্ডে রক্তসঞ্চালক ধমনীতে যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। তাই এখন তাঁরা এই প্রদাহ কমানোর পথ খুঁজছেন। আর এখানেই তাঁদের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে গাঁজা ও ভাং। ওই গবেষণা পত্রের লেখকরা জানাচ্ছেন, গাঁজা আর ভাঙের গাছে এমন কিছু উপাদান আছে, যা প্রদাহ কমাতে পারে। বিশেষ করে সিবিডি-র মত একটি উপাদানের কথা বলছেন তাঁরা যা করোনা সংক্রান্ত প্রদাহ কমাতে সক্ষম হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা। গবেষণায় আগেই প্রমাণিত হয়েছে যে সিবিডি-র মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহ নিরোধী মৌল রয়েছে, জটিল ধরনের মৃগীতে ভোগা শিশুদের পক্ষেও এই উপাদান নিরাপদ বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে এফডিএ। যদি গাঁজা-ভাং করোনা প্রদাহ কমাতে পারে, তবে তা অন্যান্য প্রদাহ নিরসনেও কাজে লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।