কলকাতা: করোনাকালে বারোয়ারি দুর্গাপুজো বন্ধের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হল। কেরলের ওনাম উৎসবের পর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। বলা হয়েছে, মন্ডপ করে দুর্গাপুজো হলে ঠাকুর দেখতে দলে দলে মানুষে ভিড় করবেন, থেকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। তাই বন্ধ রাখা হোক দুর্গাপুজো। মামলাকারী দাবির সমর্থনে মহারাষ্ট্রে বারোয়ারি গণেশ পুজো ও মহরম উৎসবের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলেও উল্লেখ করেছেন। আগামীকাল শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের ডাক্তারদের একাংশ ইতিমধ্যে রাজ্য প্রশাসনকে চিঠি লিখে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আসন্ন দুর্গাপুজোয় প্যান্ডেলে, প্যান্ডেলে মানুষের ঢল নামলে এত ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে যে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত বেড থাকবে না হাসপাতালগুলিতে। এই বিপদের কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন করেন তাঁরা।
ঘটনাচক্রে অবশ্য আজই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেন। এর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি নিউ নর্মালে করেনাবিধি মেনে দুর্গাপুজোয় সামিল হওয়ার আবেদন করেছেন। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল রাখতে হবে খোলামেলা। মণ্ডপে প্রবেশ এবং বাইরের পথ আলাদা রাখতে হবে। দর্শনার্থী এবং মণ্ডপ চত্বরে থাকা প্রত্যেককে মাস্ক পরতেই হবে। দর্শনার্থীরা মাস্ক না পরলে পুজো কমিটিগুলিকে প্রয়োজনে মাস্কের ব্যবস্থা করতে হবে। মণ্ডপ ও সংলগ্ন এলাকায় স্যানিটাইজার রাখতে হবে। প্রতিটি পুজো কমিটিকে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। ছোট ছোট ভাগে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ এবং সিঁদুর খেলার আয়োজন করতে হবে। পুজো মণ্ডপ চত্বরে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।পুজোর পুরস্কার দেওয়ার জন্য বেশি সংখ্যায় বিচারকদের পুজো মণ্ডপে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না। এক সময়ে বিচারকদের দুটির বেশি গাড়ি রাখা যাবে না। পুজোর উদ্বোধন এবং বিসর্জন ছোট করে করতে হবে। প্রয়োজনে ভার্চুয়াল উদ্বোধনের ওপরে জোর দিতে হবে। ভিড় এড়াতে তৃতীয়া থেকেই ঠাকুর দেখা শুরুর বিষয়ে নজর দিতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে। এ বছর পুজো কার্নিভাল হবে না। বিসর্জন ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে সেরে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
বিরোধী দল বিজেপিও দুর্গাপুজোর আয়োজন করছে ইজেডসিসি-তে। ২২ অক্টোবর ভার্চুয়ালি সেখানে ভাষণ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। করোনা আবহে সরকারের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে দুর্গাপুজো আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে 'ফোরাম ফর দুর্গোৎসব'।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশেও যোগী আদিত্যনাথ সরকার প্রথমে রাস্তায় প্যান্ডেল করে দুর্গাপুজো না করে ঘরে মূর্তি বসিয়ে দেবীর আরাধনা করতে বলেছিল। কিন্তু প্রবাসী বাঙালিদের প্রতিবাদের জেরে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে তারা।