নয়াদিল্লি: গোরক্ষার নামে হুজ্জুতি রুখতে সব রাজ্যকে কড়া নির্দেশ পাঠাল কেন্দ্র। গোরু বাঁচানোর নামে যে-ই বাড়াবাড়ি করবে, আইন হাতে তুলে নেবে, তার বিরুদ্ধে কঠোর হতে রাজ্য সরকারগুলিকে বার্তা পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এ ধরনের আচরণ সহ্য করা হবে না, বলেছে তারা।


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ নিয়ে মুখ খোলার দু দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারগুলিকে পাঠানো কেন্দ্রের নির্দেশাবলীতে সাধারণ মানুষকেও স্বঘোষিত গো-প্রেমীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ‘নকল’ গো-রক্ষাকারীদের কঠোর সাজা দিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারগুলিকে।

 

কেন্দ্রের নির্দেশাবলীতে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক দিক থেকেই ভারতীয় সংস্কৃতিতে গোরুর এক বিশেষ মর্যাদা, শ্রদ্ধার আসন রয়েছে। এমনকী জাতির জনক পর্যন্ত বলেছিলেন, গোরক্ষা আমার কাছে স্রেফ গোরুকে বাঁচানো নয়, এর অর্থ যে জীবন দুনিয়ায় অসহায়, দুর্বল, তাকে রক্ষা করা। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গোরুকে মেরে ফেলা হচ্ছে, গোমাতা বিপন্ন, এই অজুহাত দেখিয়ে স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে আইন হাতে তুলে অভিযুক্ত গো-নির্যাতনকারীকে মারধর করবে, শাস্তি দেবে!

বলা হয়েছে, সম্প্রতি এমন বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা জানা গিয়েছে যেখানে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গোরক্ষার ধুয়ো তুলে আইন নিজেদের হাতে নিয়ে অপরাধ করেছে। এটা মেনে নেওয়া চলে না। তাই রাজ্যগুলিকে সুনিশ্চিত করতে হবে যে, যে-ই আইন হাতে তুলে নেবে, তাকে দ্রুত আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে। এমন লোকজনকে ক্ষমা নয়। কোনও বাছবিচার না করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

গোরক্ষার নামে সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বিজেপি, সঙ্ঘ পরিবারের শাখার সদস্যদের। তাদের দিকে আঙুল উঠেছে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে গোরক্ষার ওজর তুলে তারা মারধর করেছে দলিত, মুসলিমদের, এমন অভিযোগে শোরগোল চলছে। সম্প্রতি দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে মোদী জানিয়ে দেন, তিনি গোরক্ষাকে সামনে রেখে দোকান খুলে বসা মেনে নিচ্ছেন না। যারা গোরক্ষার নামে জুলুম করছে, তাদের সমাজবিরোধী বলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।

এদিন অবশ্য নির্দেশাবলীতে এও বলা হয়েছে, যেসব রাজ্যে গো-নিধন আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেখানে কিন্তু গোহত্যা অপরাধ বলেই দেখা হবে।