নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে কেন্দ্র। এমনই জানানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।  ২০২০-তে করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। গতবারের সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়েছিল।  দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়েছে এবং সংক্রমণ রুখতে স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।


দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা স্থির করার ভার কেন্দ্র স্থানীয় প্রয়োজন অনুসারে রাজ্য সরকারগুলির হাতেই ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পর্যটন, বিমান পরিবহণ ও হোটেল শিল্প সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পুণরুজ্জীবন সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলি নিয়ে আলোচনা করছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, এই আলোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং প্যাকেজের ক্ষেত্রে কোনও সময়সীমা ঘোষণা করা হয়নি।


নতুন আর্থিক উৎসাহমূলক   প্যাকেজের প্রয়োজনীয়তা, তা কী ধরনের হতে পারে এবং কোন সময় ঘোষণা হতে পারে, তা নিয়ে সরকারের অন্দরে আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে চিন্তাভাবনা চলছে তা হল, দরিদ্র ও ছোট ব্যবসা ও তাদের জীবনজীবিকা যাতে কোনওভাবেই ব্যাহত না হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে গত মাসের শেষের দিকে জানিয়েছিল সংবাদসংস্থা।


গত বছরের লকডাউনের কারণে দেশের মোট অভ্যন্তরীন উৎপাদন (জিডিপি) মাইনাস ২৩.৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল। আশা করা হচ্ছিল যে, চলতি আর্থিক বর্ষে জিডিপি দুই অঙ্কের হারে বৃদ্ধি পাবে। এমনটা ধরে নিয়ে আরবিআই ২০২০ অর্থবর্ষের  প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৬.২ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু যেভাবে ঝড়ের গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, তা ২০২০ অর্থবর্ষে দুই অঙ্কের ডিজিপি বৃদ্ধির অনুমানের ক্ষেত্রে তার প্রতিকূল প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা রিপোর্টে এমনটা জানিয়েছে পিএইচডি চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। এর প্রেসিডেন্ট সঞ্জয় অগ্রবাল অতিমারীর মধ্যে ভবিষ্যতমুখী আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে সার্বিক  আর্থিক প্যাকেজের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন।


চেম্বার এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে। এর প্রভাব দেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই পড়ছে। অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পের সাহায্যের জন্য এই কঠিন সময়ে একটি সার্বিক আর্থিক প্যাকেজের সুপারিশ করেছে।


পিএইচডি রিপোর্ট অনুসারে, অর্থনীতি ও ব্যবসা সংক্রান্ত কুইক ইকনমিক ট্রেন্ড (কিউইটি) সূচকের ১০ টির মধ্যে মাত্র ছয়টি ২০২১-এর এপ্রিলে ইতিবাচক ছিল। এগুলি হল-জিএসটি সংগ্রহ, ই-ওয়ে বিল, রেলওয়ে পণ্য পরিবহণ, রফতানি, বিদেশী মুদ্রা তহবিল ও উৎপাদন সংক্রান্ত পিএমআই।


গত বছর সরকার ও আরবিআই করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা ও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে একগুচ্ছ প্যাকেজের ঘোষণা করেছিল।