ভোপাল: ফের আফ্রিকান চিতার (African Cheetah Death) মৃত্যু মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) কুনো জাতীয় উদ্যানে (Kuno National Park)। বন দফতরের এক বর্ষীয়ান আধিকারিকের ধারণা, এবার সম্ভবত নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে গিয়ে প্রাণ খুইয়েছে আফ্রিকান চিতাটি। কিন্তু তাতে বন দফতরের চিন্তা কমার কথা নয়। কারণ এই নিয়ে গত চার মাসে মোট ৭টি আফ্রিকান চিতার মৃত্যু হল কুনো জাতীয় উদ্যানে।
যা জানা গেল...
যে আফ্রিকান চিতার মৃত্যু হয়েছে, তার নাম 'তেজস'। গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে শেওপুর জেলায় নিয়ে আসা হয়। চার বছর বয়সী এই চিতাটি নিজেদের মধ্যে মারপিট করতে গিয়ে মারা যায়, জানান প্রিন্সিপাল চিফ কনসার্ভেটর অফ ফরেস্ট (PCCF) ওয়াইল্ডলাইফ, জে এস চৌহান। ভারতে চিতা পুনর্বাসন নিয়ে সরকারি ভাবে জাঁকজমক করে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, পর পর ৭টি চিতার মৃত্যুর পর তা বহু প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে গিয়েছে সেটি। আপাতত যা জানা গিয়েছে, মৃত্যুর সময় নিজের এনক্লোজারেই ছিল 'তেজস'। ঘটনাচক্রে, তার মৃত্যুর দিনদুয়েক আগেই দুটি পুরুষ চিতাকে প্রথম বার জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েও এবার চিন্তায় বন দফতর। সরকারি ভাবে তেজসের মৃত্যু নিয়ে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে বন দফতরের দাবি, মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ ১১ নম্বর এনক্লোজারে থাকা তেজসের দেহে আঘাতের বেশ কিছু চিহ্ন দেখতে পান নজরদারির দায়িত্বে থাকা টিম। তার পরই পশু চিকিৎসকদের ডেকে আনা হয়। কিন্তু চিতাটিকে ঘুম পাড়ানোর অনুমতি নিয়ে চিকিৎসকদের সেখানে পৌঁছতে দুপুর ২টো হয়ে যায়। তত ক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। চিতাটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পারন পশু চিকিৎসকরা। ঠিক কী কারণে তেজসের মৃত্যু হল, জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত তার ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। সেটি পেলেই ছবিটা পরিষ্কার হবে।
মৃত্য়ু চলছেই...
গত ২৭ মার্চ, সাশা নামের একটি চিতা, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় মারা যায়। সাশাকে নামিবিয়া থেকে আনা হয়েছিল। এর পর, ১৩ এপ্রিল, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা আরও একটি চিতা মারা যায়। তার নাম ছিল উদয়। গত ৯ মে, 'দক্ষ' নামে একটি পুরুষ চিতার মৃত্যু হয়। একেও আনা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এই তিন জন ছাড়াও, নামিবিয়া থেকে আনা মাদি চিতা 'জ্বালা' গত মার্চে যে চার জন সন্তানের জন্ম দেয়, তাদের মধ্যে তিন জনই ডিহাইড্রেশনে মারা গিয়েছিল। 'তেজস'-কে নিয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছল সপ্তমে। গত বছর, সেপ্টেম্বর মাসে নামিবিয়া থেকে ৫টি মাদি চিতা ও ৩টি পুরুষ চিতা রীতিমতো জাঁকজমক করে কুনো জাতীয় উদ্যানে নিয়ে আসা হয়। ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে আরও ১২টি চিতা আসে। কিন্তু যে হারে তাদের মৃত্যু হচ্ছে, তার পর ভারতে চিতা প্রজাতি ফেরানোর এই উদ্যোগ আদৌ কতটা সফল হওয়া সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তায় বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:গণনার দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বিপত্তি