গরওয়া: লোকালয়ে প্রায়শই তাণ্ডব চালায় হাতির দল। সেই ভয়ে একসঙ্গে শুয়েছিল কচিকাঁচারা। কিন্তু তার পরও অঘটন এড়ানো গেল না। সাপের দংশনে প্রাণ গেল তিন শিশুর। কিন্তু গোড়াতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ওই তিন শিশুকে। সেখানে দু'জনের মৃত্যু হলে, একজনকে নিয়ে যাওয়া হয় কোয়াকের কাছে। কিন্তু প্রাণরক্ষা হয়নি তার। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামে। (Jharkhand Snakebite)
ঝাড়খণ্ডের গরওয়া জেলায় বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে। যে চাপকলি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে, সেটি চিনিয়া থানার অন্তর্গত। হাতির হামলার ভয়ে একটি পরিবারের আট থেকে ১০ শিশু একত্রে শুয়েছিল রাতে। মেঝেয় বিছানা করে শুয়েছিল তারা। সকলে যখন অঘোরে ঘুমাচ্ছে, সেই সময় ঘরে ঢুকে পড়ে কাল কেউটে। তাতেই অঘটন ঘটে যায়। (Jharkhand News)
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঝেয় পর পর শুয়েছিল শিশুরা। সাপটি ঘরে ঢুকে তিন শিশুকে কামড়ায়। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় সকলের। জানাজানি হতে, তিন শিশুকে কোলে নিয়ে পরিবারের লোকজন স্থানীয় ওঝার কাছে ছুটে যান রাত ১টা নাগাদ। কিন্তু সেই জলপোড়ায় কাজ হয়নি। বরং ওঝার কাছেই দুই শিশু মারা যায়। এর পর তৃতীয় শিশুটিকে তুলে স্থানীয় কোয়াকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সে-ও মৃত্যুর কোলে ঢসে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শিশুদের পান্নালাল কোরওয়া (১৫), কাঞ্চন কুমারী (৮) এবং বেবি কুমারী (৯) নামে শনাক্ত করা গিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে জানা গিয়েছে, গ্রামে হাতির হামলার ভয়ে, এমনিতেই লোকজন মেঝেয় শোয়া অভ্যাস করে নিয়েছেন। তাতেই এমন বিপত্তি ঘটে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, খাবারের খোঁজে জঙ্গল থেকে ঘুরতে ঘুরতে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতির দল। তাতে প্রায়শই ক্ষয়ক্ষতি হয় গ্রামবাসীদের। দুর্ঘটনা এড়াতে তাই সকলে মিলে কখনও স্কুলের ঘরে, কখনও বা এক জায়গায় অনেকে মিলে রাত কাটান। এক্ষেত্রেও তেমনটিই ঘটেছিল। কিন্তু হাতির হামলা না হলেও, সাপের দংশনে প্রাণ গেল তিন শিশুর। এমন ঘটনা যদিও এই প্রথম নয়। সাপের দংশনের ক্ষেত্রে, রোগীকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার উদাহরণ উঠে এসেছে আগেও। মানুষের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের।