হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই খুল্লামখুল্লা ভারতবিদ্বেষী স্লোগান তুলেছে বাংলাদেশ। প্রকাশ্য সভায় পোড়ানো হয়েছে ভারতের পণ্য । বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক থেকে রাজনীতিক, কখনও সেভেন-সিস্টার্স দখল , কখনও চিকেন নেক কেটে নেওয়ার হুঙ্কার ছেড়েছেন। এদিকে পহেলগাঁওকাণ্ডের পর ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের আবহে  পাকিস্তানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে চিন।  পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় স্বাধীনতা ধরে রাখতে সবরকম ভাবে সাহায্য করার বার্তা দেয় বেজিং। এই আবহে এবার তে-মাথা এক হল। বৃহস্পতিবার কুনমিংয়ে প্রথমবার চিন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হল। চিনের উদ্যোগেই এক হয় ভারতবিরোধী তিন দেশ। বৈঠকে ছিলেন চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী সান ওয়েইডং, পাকিস্তানের অতিরিক্ত বিদেশ সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত বিদেশ সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক । শুধু কি তিন দেশের মধ্যে সম্পর্ক পোক্ত করতেই এই বৈঠক, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র? কূটনীতিকদের কারও কারও মতে, ভারতের উপর চাপ বাড়াতেই এই তে-মাথার এক হওয়া। 

Continues below advertisement

বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, প্রযুক্তি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের হাত ধরা নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।ত্রিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার শুরুটাই হয় একে অপরের ঢালাও প্রশংসার মাধ্যমে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে বেজিং, ঢাকা আর ইসলামাবাদ হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে, তেমনটাই অঙ্গীকার নেওয়া হয় আলোচনায়। 

শুক্রবার (২০ জুন) চিনের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে চিনা বিদেশ মন্ত্রক জানায়,  বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান উভয়ই চিনের 'ভাল প্রতিবেশী, ভাল বন্ধু'। তাই চিন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা তিনটি দেশের মানুষের সাধারণ স্বার্থে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।  এই ত্রিপাক্ষিক সম্পর্ক তিনটি দেশের মানুষের জন্যই  শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে।  বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে চিন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছে । আগামীতে এই আলোচনাকে বাস্তব রূপ দিতে বদ্ধপরিকর তারা। 

Continues below advertisement

বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠক কূটনৈতিক দিক থেকে ইঙ্গিতবহ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ একদিকে পহেলগাঁওয়ের পর ভারত সারা বিশ্বের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও কার্যত কোণঠাসা পাকিস্তান। অপারেশন সিঁদুরের সময়ই পাকিস্তান টের পেয়েছে, তারা কতটা কোনঠাসা। ৪ দিনের সংঘাতেই তারা বুঝে গিয়েছে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে ভারতের থেকে যোজন যোজন পিছনে তারা। এই পরিস্থিতিতে চিনকে পাশে পেলে বুকে বল পায় পাকিস্তান। অন্যদিকে,বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসও চিনের সাহায্য প্রার্থী। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম তিনিই  পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তিন পক্ষই ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, এভাবে ভরতের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে তারা।