নয়াদিল্লি: ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পারদ বৃদ্ধির আশঙ্কা ছড়িয়ে পূর্ব লাদাখে দুটি চিনা সামরিক হেলিকপ্টারকে গত সপ্তাহে ভারতের আকাশসীমার খুব কাছ দিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে বলে খবর। এগুলি চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ)। গত ৫ মে দুপুরে লাদাখে ভারতীয় বায়ুসেনার এক সিনিয়র অফিসার আকাশে যখন রেকি করছিলেন, প্রায় একই সময়ে চিনা হেলিকপ্টারগুলিকে দেখা যায় বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। পালটা ভারতীয় বায়ুসেনাও সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় টহল দিতে লে-র বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে সুখোই জেটবিমান পাঠায়।
যদিও পরে ভারতীয় বিমানবাহিনী জানায়, এটা নিয়মিত মহড়া প্রক্রিয়া, আকাশসীমা লঙ্ঘিত হয়নি। সূত্রের খবর, সেদিনই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) কাছে প্রায় ২৫০ ভারতীয় ও চিনা সেনা জওয়ানের হাতাহাতি, সংঘর্ষ হয়। হিংসাত্মক মেজাজে সংঘাতে জড়ায় দুপক্ষ, পরস্পরকে ইট-পাথর ছোঁড়াছুঁড়িও হয়। ৭০-৮০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান জখম হন বলে জানিয়েছে সূত্রটি। এ ঘটনার জেরে দুদেশই সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে এসে মোতায়েন করে। তবে সংঘর্ষের পরদিনই দুপক্ষের স্থানীয় কম্যান্ডাররা বৈঠকে বসেন উত্তেজনা প্রশমনে। গত শনিবার চিন-ভারত সীমান্তের সিকিম সেক্টরের নাকু লা পাসেও প্রায় ১৫০ চিনা ও ভারতীয় জওয়ানের মুখোমুখি সংঘাত হয়। দুপক্ষের দশ জওয়ান জখম হয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পূর্ব লাদাখের পাঙ্গং সো হ্রদের ধারে হাতাহাতিতে জড়িয়েছিল ভারত ও চিনা জওয়ানরা। যদিও দুপক্ষের ওপর মহলের বৈঠকে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়। তবে ভারতীয় ও চিনা সেনাবাহিনীর মধ্যে সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে বড়, বেশিদিনের দ্বন্দ্ব তৈরি হয় ২০১৭র ১৬ জুন থেকে ডোকালামে দুপক্ষের সংঘাতে। ৭৩ দিন চলেছিল অচলাবস্থা। শেষ হয়েছিল ২০১৮র ২৮ আগস্ট। বিতর্কিত এলাকায় চিনা সেনাবাহিনীর রাস্তা নির্মাণ ভারতীয় বাহিনীর বন্ধ করা থেকেই এর সূত্রপাত ঘটে।
ডোকালাম সংঘাতের কয়েক মাস বাদে ২০১৮-র এপ্রিলে চিনের উহান শহরে অনুষ্ঠিত প্রথম অঘোষিত শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঠিক করেন, তাঁরা নিজেদের সেনাবাহিনীকে ‘কৌশলগত রূপরেখা’ দেবেন যাতে যোগাযোগ জোরদার করার মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা, বোঝাপড়া গড়ে ওঠে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসার ঘটানোয় জোর দিতে দুই নেতা গত বছর অক্টোবরে চেন্নাইয়ের কাছে মমল্লপুরমে দ্বিতীয় অঘোষিত শীর্ষবৈঠক করেন।