নয়াদিল্লি: লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারত-চিন বিরোধ, সংঘাতের মধ্যেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ বিজেপির। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনে অর্থ দেয় ভারতে চিনা দূতাবাস। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর নামে তৈরি ওই ফাউন্ডেশনের সভাপতি কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। তার পরিচালনাকারী বোর্ডে আছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, মনমোহন সিংহ, পি চিদম্বরমের মতো তাবড় কংগ্রেস নেতা-নেত্রীরা।
তিনি দাবি করেন, রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে ২০০৫-০৬ সালে তারা গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের নয়াদিল্লি দূতাবাস থেকে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকার মতো ডোনেশন পেয়েছে। রিপোর্টে দূতাবাসকে সাধারণ ডোনেশনদাতাদের তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রসাদের দাবি, ডোনেশন পাওয়ার পরই ভারত ও চিনের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি কেন প্রয়োজন, বাঞ্ছিত, সে ব্যাপারে গবেষণা করে ফাউন্ডেশন। তাতে সওয়াল করা হয়, চিনের থেকেও এমন অবাধ চুক্তি ভারতের বেশি দরকার, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার অঙ্গ হিসাবে এই চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু ওই চুক্তির ফলে ভারতের প্রভূত আর্থিক ক্ষতি হয়।
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য়ও এর আগে ট্যুইট করেছিলেন, ইউপিএ আমলে চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ২০০৩-০৪ এ ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১৩-১৪য় বেড়ে হয়ে ৩৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।


সাংবাদিক বৈঠকে প্রসাদ বলেন, কংগ্রেস তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগের জবাব দিক। তাঁর প্রশ্ন, কংগ্রেস কি কিছু লুকোচ্ছে? কংগ্রেস ও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে কি কোনও চুক্তি হয়েছে? কেন কংগ্রেসকে ডোনেশন দেওয়া হয় বলে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ওরা (সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী) রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের পাওয়া ডোনেশনের জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকারকে আক্রমণ ও চিনকে সমর্থন করছে। তিনি বলেন, প্রথমে ওরা চিনকে জমি ছেড়ে দেয়, তারপর ৯০ লক্ষ টাকা দান নেয়। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশন কংগ্রেসের শাখা ছাড়া কিছুই নয়। তারা কি অর্থ গ্রহণের আগে অনুমতি নিয়েছিল? কেন নিচ্ছে, সেটা সরকারকে জানিয়েছিল?
এদিকে ২০০৮ সালে কংগ্রেস ও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে স্বাক্ষরিত বোঝাপড়া চুক্তি (মউ) নিয়ে তদন্তের দাবিতেও সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন পেশ হয়েছে। রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনকে ডোনেশন দেওয়ার সঙ্গে কি ওই চুক্তির কোনও সম্পর্ক আছে, প্রশ্ন তুলে বিজেপি কংগ্রেসের ‘সম্পূর্ণ উত্তর’ চেয়েছে।
বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা আবার চিন থেকে রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের ডোনেশন প্রাপ্তির খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, এটা কংগ্রেস, চিনের গোপন বোঝাপড়া।
যদিও কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বিজেপির দাবি খারিজ করে এটা বাস্তব সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর কৌশল বলে আখ্যা দিয়েছেন।