নয়াদিল্লি: সাইবার জালিয়াতির অভিযোগে রাজধানীতে ধৃত চিনা নাগরিক। কয়েক হাজার, কয়েক লক্ষ বা কয়েক কোটি নয়, ১০০ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। অনলাইন মাধ্যমে শেয়ার বাজারে যে লেনদেন হয়, তাতে যুক্ত ছিলেন এই চিনা নাগরিক। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এই জালিয়াতি চক্র চলত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। (Stock Trading Scams)
ধৃত চিনা যুবককে ফাং চেংজিন নামে শনাক্ত করা গিয়েছে। সুরেশ কে অচুথান নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি অভিযোগ দায়ের করেন। সাইবারক্রাইম পোর্টাল সুরেশ জানান, তাঁর কাছ থেকে ৪৩.৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কেউ। সুরেশ জানান, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ নিয়ে অনলাইন প্রশিক্ষণের কথা বলা হয় তাঁকে। সেই ফাঁদে পা দিতেই বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বাবদ টাকা ঢালতে বলা হয়। কিন্তু শেয়ার বাজারে ঢালছেন বলে তিনি মনে করলেও, ওই টাকা আসলে ফাংয়ের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। (Chinese Man Arrested)
অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। যে যে অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা পড়ে, সেগুলিকে ট্র্যাক করা হয়। এর মধ্যে এপ্রিল মাসে একটি অ্যাকাউন্টে ১.২৫ লক্ষ টাকা জমা পড়ার হদিশ পড়ে। ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্ট খোলা হয়েছিল মুনিরকার মহালক্ষ্মী ট্রেডার্সের নামে। একটি মোবাইল নম্বরও হাতে পায় পুলিশ। সেই ফোনের মাধ্যমেই ফাংয়ের খোঁজ মেলে। দিল্লির সফদরজং এলাকায় থাকছিলেন ফাং।
পুলিশ জানিয়েছে, জালিয়ার জন্যও ওই ফোনটি ব্যবহার করতেন অভিযুক্ত। ফাং এবং তাঁর সহযোগীদের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপথনও পুলিশের হাতে উঠেছে। ওই কথোপকথন ঘেঁটে দেখা গিয়েছে। এক সহযোগীকে মোবাইল রিচার্জ করতে নির্দেশ দেন ফাং, যাতে জালিয়াতি চালিয়ে যাওয়া যায়।
পুলিশ জানিয়েছে সাইবার ক্রাইম পোর্টালে কমপক্ষে ১৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে, আর ওই সবক'টি অভিযোগই একিট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত। সবমিলিয়ে ১০০ কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশেও সাইবার অপরাধ এবং আর্থিক তছরুপের দু'টি মামলা দায়ের হয়েছে, তাতেও নাম জড়িয়েছে ফাংয়ের।
শাহদরার পুলিশের DCP প্রশান্ত গৌতম জানিয়েছেন, অনলাইন স্টক ট্রেডিং জালিয়াতির মামলা এটি। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জাল ছড়ানো হয়। বিনিয়োগকারীদের নিশানা করা হয় একে একে। আরও দু'টি মামলায় নাম জড়িয়েছে ওই চিনা নাগরিকের। তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।