বেজিং: দু'সপ্তাহ লড়াই করে অবশেষে মারা গেলেন চিনে টিকটকের জনপ্রিয় তারকা লামু। অসংখ্য অনুরাগীর প্রার্থনা মিথ্যা করে দিয়ে চলে গেলেন ৩০ বছরের এই ভিডিও ব্লগার।
১৪ সেপ্টেম্বর লাইভ শো চলাকালীন তাঁর উপর চড়াও হন তাঁর প্রাক্তন স্বামী তাং। পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও দেহের অধিকাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
টিকটকের চিনা ভার্সন দুইইনে একটি অ্যাকাউন্ট ছিল লামুর। তাঁর ফলোয়ার ৭ লক্ষ ৮২ হাজার। মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর লাইক ৬.৩ মিলিয়ন। লামুর পারফরম্যান্স দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
১৪ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। তিব্বতি ভাষায় একটি ট্র্যাডিশনাল গান পোস্ট করেন। তাঁর ভক্ত, অনুরাগীদের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা ছিল ওই গানে।
প্রতিদিন ওই প্ল্যাটফর্মে লাইভ শো করতেন তিনি। সেদিনও লাইভে ছিলেন লামু। তাঁর অগণিত গুণমুগ্ধ তন্ময় হয়ে দেখছিলেন তাঁর শো। কিন্তু আচমকাই স্ক্রিন ব্ল্যাক হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় শো।
হঠাৎ কী হল বুঝেই উঠতে পারছিলেন না নেটিজেনরা। তারপরের দুদিন কোন পোস্ট নেই। লামুর কী হল জানতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অসংখ্য অনুরাগী। ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ।
ঘটনার দুদিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হামলার কথা জানান লামুর বোন জুয়োমা। দিদিকে ভাল করে তুলতে আর্থিক সাহায্য চান। সাড়া দেন বহু মানুষ। একটি সংস্থা চিনা মুদ্রায় এক মিলিয়ন ইউয়ান সাহায্য দেয়।
ঘটনার পর লামুকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁকে আরেকটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু কোনও চেষ্টাই কাজে আসেনি।
চিকিৎসকরা জানান বুধবার রাত ৯টা নাগাদ লামু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পুলিশও জানায় তাঁর স্বামী তাং-এর হামলার জেরে মৃত্যু হয়েছে লামু-র।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, যে পরিমাণ আর্থিক সাহায্য তাঁরা পেয়েছিলেন তার ৬০ শতাংশের বেশি খরচা হয়ে গিয়েছে। বাকিটা তাঁরা ফিরিয়ে দেবেন। ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।
কয়েকটি চিনা মিডিয়ার খবর, লামু গার্হস্থ্য হিংসার জেরে ডিভোর্স পাওয়ার আইনি উদ্যোগ নেওয়ায় বদলা নিতেই তাঁকে আগুনে পুড়িয়েছে প্রাক্তন স্বামী। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।