৯ দিন ধরে জেলবন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই পড়শি দেশে বেড়েছে হিন্দুদের উপর আক্রমণ, নিপীড়ন। এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালতে জামিন-মামলার শুনানি রয়েছে। তার আগে, শুনানির ঠিক আগের দিন চিন্ময়কৃষ্ণর আইনজীবীর ওপর হয়েছে ভয়ানক হামলা। প্রবল মারধরে গুরুতর আহত তিনি। হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি। আর মঙ্গলবার চিন্ময়কৃষ্ণ-মামলার শুনানি। কে সওয়ার করবেন তাঁর হয়ে ?
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে হিন্দু আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর শুরু হয়েছে অত্যাচার। দমিয়ে রাখতে, তাঁদের বিরুদ্ধে সাজানো হচ্ছে নানা 'মিথ্যে মামলা'। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার হামলায় গুরুতর আহত হন চিন্ময়কৃষ্ণর আইনজীবী রমেন রায়। তিনি ICU-তে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
চিন্ময়কৃষ্ণর হয়ে দাঁড়ালে আইনজীবীরা হামলার মুখে পড়ছেন। এই আতঙ্কটা সফল ভাবে সকলের মনে গেঁথে দিতে পেরেছে বাংলাদেশি উগ্রবাদীরা। আদালতে যাতে কেউ চিন্ময়কৃষ্ণর হয়ে দাঁড়াতে না পারেন, সেই উদ্দেশ্যে এই কাজ। প্রতিক্রিয়া কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাসের। চিন্ময়কৃষ্ণর গ্রেফতারির পর আরও চারজন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতে আসার পথে বেনাপোল সীমান্তে আটকানো হচ্ছে ইসকন ভক্তদের। এই আবহেই আজ সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন-শুনানির দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের আইনজীবী ও সাংবাদিকদের নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংখ্যালঘু অধিকার কাউন্সিল। বাংলাদেশের সংবাদপত্র ডেলি স্টার সূত্রে খবর, ৭০ জন সংখ্যালঘু আইনজীবী এবং চট্টগ্রামের ২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। তাঁদের বিরুদ্ধে দেশি বোমা বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুরের মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মামলায় আইনি সাহায্য এবং সংবাদ সম্প্রচারে বাধা দেওয়ার জন্যই এই মামলা বলে মনে করছে সংখ্যালঘু অধিকার কাউন্সিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যাকে বলেছিলেন সোনার বাংলা সেই বাংলাদেশেই আজ হিন্দুদের ওপর চলছে সন্ত্রাসের রাজত্ব। কট্টরপন্থীদের হামলায় বাড়ি-ঘর, দোকানপাট কিছু আস্ত থাকছে না। হিন্দু নাগরিকরা ছাড় পাচ্ছে না কেউ। কোনওক্রমে প্রাণ হাতে করে পালিয়ে আসছেন অনেক ভারতীয় নাগরিক! হিন্দুদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণার উদ্গীরণ ঘটেই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদের মুখ ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণর মুক্তি মেলে কি না সেদিকেই সারা বিশ্বের নজর । এরই মধ্যে ভারতে তো বটেই, আমেরিকা থেকে ব্রিটেন , সব জায়গায় সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি ও হিন্দুদের উপর হামলার কঠোর সমালোচনা হয়েছে। এখন দেখার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে, বাংলাদেশ সনাতনী সন্ন্যাসীকে মুক্তি দেয় কি না।
আরও পড়ুন :
অভীক দে-কে কাউন্সিলে ফেরানো নিয়ে পথে বসলেন চিকিৎসকরা, ফের প্রশ্ন তুললেন ডা. দেবাশিস হালদার