ঢাকা: বাংলাদেশে জামিন পেলেন প্রাক্তন ISKCON নেতা তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। রাষ্ট্রদ্রোহ বা দেশদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। নয় নয় করে প্রায় পাঁচ মাস ধরে ছিলেন জেলবন্দি। শেষ পর্যন্ত, বুধবার হাইকোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করল। এদিন বিচারপতি মহম্মদ আতোয়ার রহমান এবং বিচারপতি মহম্মদ আলি রেজা চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মঞ্জুর করেছেন। কিন্তু জামিন পেলেও আজই সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ মুক্তি পাবেন কি না সংশয় রয়েছে। কারণ তিন দিন সরকারি ছুটি রয়েছে সেখানে। ফলে আদালত বন্ধ থাকবে। ওই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনূস সরকার জামিনের বিরোধিতা করে আবেদন জানালে মুক্তি পাওয়া আটকে যেতে পারে। (Chinmoy Krishna Das)

Continues below advertisement

হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করলেও, এখনই চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তি পাওয়া নিয়ে সংশয়ের আরও কারণ রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ না দিলে যদিও চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী প্রহ্লাদদেব নাথ। এর আগে, গত ২৩ এপ্রিল চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য হাইকোর্টের কাছে মক্কেলের জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সন্ন্যাসী। বিনা বিচারে এভাবে তাঁকে আটকে রাখা উচিত নয়।সেই দিন যদিও হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করেনি। তবে আজ জামিন পেলেন চিন্ময়কৃষ্ণ। (Bangladesh News)

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনূস। কিন্তু তার পর সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায় দেশে, বেছে বেছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিশানা করা হয়। সেই আবহেই গত বছর চট্টগ্রামে BNP-র প্রাক্তন সম্পাদক ফিরোজ খান কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। চিন্ময়কৃষ্ণ এবং আরও ১৮ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ করেন তিনি। জানান ২৫ অক্টোবর হিন্দুদের নিয়ে যে মিছিল বেরিয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করেন চিন্ময়, জাতীয় পতাকার ঊর্ধ্বে গেরুয়া পতাকা ওড়ান তিনি।   

Continues below advertisement

এর পর, গত বছর ২৫ নভেম্বর গ্রেফতার হন চিন্ময়কৃষ্ণ। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত তাঁকে জেলে পাঠায়। তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। এর পর, গত বছর ১১ ডিসেম্বরও জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ। কিন্তু সেবারও তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। কেন তাঁকে জামিন দেওয়া যাবে না, জানতে চাওয়া হয়। এর পর ৩০ এপ্রিল শুনানির দিন নির্ধারিত হয়। আর আজ শুনানিতে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মঞ্জুর করা হল।

চিন্ময়কৃষ্ণকে আদালতে তোলার দিন এক আইনজীবীরও মৃত্যু হয়। ওই আইনজীবীর ভাইয়ের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে বেশ কিছু সংখ্যালঘু বা হিন্দু আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সেই নিয়েও বিস্তর টানাপোড়েনের সাক্ষী হন সকলে। চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবীদের উপরও হামলা হয়েছে, তাঁরা হুমকি, হুঁশিয়ারি পেয়েছেন। আইনি জটে বারবার পিছিয়ে গিয়েছে জামিনের আবেদনের শুনানি।