নয়াদিল্লি: কার্যকালের মেয়াদ শেষ হতে আর একমাসও বাকি নেই। সেই আবহে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। জানালেন, সুপ্রিম কোর্ট দেশের মানুষের আদালত। তার মানে এই নয় যে, সংসদের বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে হবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে। (Supreme Court)


সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস অন রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশনের তরফে গোয়ায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। আগামী ১০ নভেম্বর অবসরগ্রহণের কথা তাঁর। সেখানে বক্তৃতা করতে উঠে তিনি জানান, গত ৭৫ বছরে ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে সুপ্রিম কোর্ট।  সেই রাস্তা থেকে কখনও বিচ্যুত হওয়া চলবে না আমাদের। (CJI Dy Chandrachud)


প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের কথায়, "আমাদের আদালত মানুষের আদালত। ভবিষ্যতেও আদালতের এই ভূমিকাই থাকা উচিত। মানুষের আদালত হওয়ার অর্থ এই নয় যে, সংসদে বিরোধীর ভূমিকা পালন করতে হবে আমাদের। আমার মতে, বর্তমান সময়ে বিভাজন আরও স্পষ্ট। যাঁদের পক্ষে রায় যায়, তাঁরা মনে করেন, সুপ্রিম কোর্ট একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান। আবার রায় বিরুদ্ধে গেলে জোটে অবমাননা।"



এই রীতি অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মত প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের। তাঁর বক্তব্য, "আমার মনে হয়, এটা বিপজ্জনক। শুধুমাত্র কোনও মামলার রায় দেখে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা, তার কাজকর্মের বিচার করা যায় না। রায় কারও পক্ষে যেতে পারে, আবার কারও বিপক্ষেও যেতে পারে। সবদিক খতিয়ে দেখে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বিচারপতিদের। কোন ক্ষেত্রে আইনের কোন তত্ত্ব প্রয়োগ করা যেতে পারে, আমার বিশ্বাস, তা বোঝার ক্ষমতা রয়েছে বিচারপতিদের। আমরা যদি তা মেনে নিতে পারি, তাহলে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।" 


আদালতের শুনানি পর্বের সরাসরি সম্প্রচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহায়ক হয়ে উঠেছে বলেও মত প্রধান বিচারপতির। তাঁর মতে, কিছু আইনজীবী রয়েছে, তাঁরা গ্যালারির মন জয়ের জন্য আদালতে কথা বলেন।  এক্ষেত্রে নিজেদেরই সচেতন হতে হবে, দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন হতে বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার গোয়ায় রাজ্যপাল পিএস শ্রীধরনের  লেখা 'ট্র্যাডিশনাল ট্রিজ অফ ভারত' বইও প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।