বীরভূম: ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে জনসংযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চালু করেছেন।  পাড়ায় পাড়ায় শিবির বসিয়ে দলীয় কর্মীরা সরকারি অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যসাথী সহ নানা সরকারি প্রকল্পের আওতার বাইরে থাকা লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে নেমে পড়েছেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও মানুষের কাছে পৌঁছতে পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তাঁকে ঘিরে গতকাল বোলপুরের পদযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। তাঁর ক্রাউডপুলার ইমেজ যে একই রয়েছে, তারই ইঙ্গিত মেলে।


গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপি প্রথম সারির কেন্দ্রীয়, রাজ্য নেতারা যে রুটে রোড শো করেন, সেই পথেই হাঁটেন মমতা।  জনোচ্ছ্বাস দেখে তুলনা, আলোচনা শুরু হয়ে যায়, কার কর্মসূচি ভিড়ের মাপকাঠিতে কাকে টেক্কা দিয়েছে? শাহ না মমতা, কার কর্মসূচিতে বেশি জনসমাগম হয়েছে, রাজনৈতিক মহলেও দাবি, পাল্টা দাবি ঠোকা শুরু হয়। তার মধ্য়েই আজ বীরভূম সফরে বল্লভপুরডাঙা থেকে পাশের সরকারডাঙা গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনতে শুনতে হঠাত্ তাঁর নজরে আসে, সেখানে একটি চায়ের দোকানে রান্না হচ্ছে। দোকানে ঢুকে বসে পড়েন তিনি। নিজেও হাত লাগান রান্নায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, দু-চারটে লঙ্কা দাও, স্বাদ হবে! খুন্তি নাড়ালেও চা ছাড়া আর কিছু খাননি তিনি। চা খেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দোকানদারের হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে যান তিনি।

গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর করে  মুখ্যমন্ত্রী ফিরে যাওয়ার পর অবশ্য গ্রামবাসীদের অনেকের গলায় শোনা যায় ক্ষোভের সুর। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মেলেনি বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। বল্লভপুরডাঙার বাসিন্দা তুলসি মুর্মু বলেন, ১০০ দিনের কাজ করার পরও টাকা পাই না। ৬ মাস পর এক হাজার-২ হাজার টাকা দিয়েছে। কেউ আবার এক টাকাও পায়নি। ফলে অধিকাংশই ১০০ দিনের কাজে যান না। মুণি টুডু হতাশার সুরে বলেন, বাড়ির টাকা আমরা চোখেই দেখিনি, আমফানের টাকা পাইনি, বড়লোকরা পায় আমরা পাই না। আমরা বলব কাকে, কেউ কথাই বলতে আসে না!

মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানোর পর কি কোনও সুরাহা হবে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দারা।