নয়াদিল্লি: ভোটমুখী বিহারে রাজনীতির পারদ চড়ছে লাগাতার। আর সেই আবহেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। তাদের দাবি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থাকে ১০৫০ একর জমি দিচ্ছে কেন্দ্র। বার্ষিক মাত্র ১ টাকা ভাড়ায় ওই বিপুল পরিমাণ আদানিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। (Gautam Adani)

Continues below advertisement

নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন ঘিরে এমনিতেই উত্তাল বিহার। সেই আবহেই আদানিদের জমি ‘উপহার’ দেওয়ার খবরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কংগ্রেস জানিয়েছে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আদানিদের হাতে ১০৫০ একর জমি তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাও বার্ষিক ১ টাকা ভাড়ায়। ৩৩ বছরের জন্য চুক্তি হয়েছে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে। ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬.৭৫ টাকা প্রতি ইউনিটে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে সাধারণ মানুষকে। (Bihar Power Plant)

কংগ্রেস নেতা পবন খেরা সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, বিহারে ‘ডাবল লুঠ’ চলছে। বিহারে মাটিতে, বিহারের কয়লায়, বিহারের টাকায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। আর সেই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেই বিদ্য়ুৎ কিনতে হবে সাধারণ মানুষকে। পবনের কথায়, “মোদি সরকার আদানি গোষ্ঠীকে ১০ লক্ষ গাছ দিতে প্রস্তুত, বার্ষিক ১ টাকা ভাড়ায় ৩৩ বছরের জন্য ১০৫০ একর জমি দিতে প্রস্তুত। ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎপ্রকল্প হচ্ছে। যে কৃষকের জমি নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে, যাতে প্রতিবাদ করতে না পারেন।”

Continues below advertisement

পবনের বক্তব্য, “বাজেটেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় সরকার জানিয়েছিল, তারা নিজেরাই সেটি গড়বে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রকল্পটি তুলে দেওয়া হয় আদানিদের হাতে। বিহারের জমি, বিহারের টাকা, বিহারের কয়লা ব্যবহার করে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে, তা বিহারের মানুষকেই ৬.৭৫ টাকা প্রতি ইউনিট দরে বিক্রি করা হবে। এটা আসলে ‘ডাবল লুঠ’। মোদির বন্ধু হওয়ার সব সুবিধা ভোগ করছেন আদানি।”

পবনের দাবি, মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেভাবে একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ধারাভি বস্তি উন্নয়ন প্রকল্প আদানিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগঢ়ে নির্বাচনের আগে যেভাবে শিল্পপতিকে প্রকল্পের বরাত দেওয়া হয়, একই ভাবে বিহারে নির্বাচনের আগে আদানিদের হাতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প তুলে দেওয়া হল। পবনের অভিযোগ, যেখানেই পরাজয়ের সম্ভাবনা থাকে, আগেভাগে আদানিদের ‘উপহার’ মিটিয়ে দেওয়া হয়।

বিহারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়তে কৃষকদের থেকে জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের। পবন জানান, জোর করে জমির কাগজে সই নেওয়া হয়েছে কৃষকদের। ভয় দেখানো হয় তাঁদের, পেন্সিল দিয়ে লেখানো হয় নাম। যাঁদের জমি কেড়ে নেওয়া হল, তাঁদেরই বেশি দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে। মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশে ইউনিট প্রতি বিদ্য়ুতের দাম ৩-৪ টাকা হলেও, বিহারে তা ৬,৭৫ টাকা রাখা হবে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, যে জমিতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়া হবে, তা একটি বাগান। প্রায় ১০ লক্ষ আম গাছ আছে ওই জমিতে। সব কেটে ফেলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। জমির অত্যন্ত কম দাম মেটানো হয়েছে, কৃষকরা এমন দাবি করছেন বলেও দাবি পবনের।