নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের মুখে কংগ্রেসকে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা করের নোটিস পাঠাল আয়কর দফতর। ২০১৭-১৮ 'অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার' থেকে ২০২১-২২ 'অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার' পর্যন্ত পেনাল্টি, সুদ হিসেবনিকেশ করে এই নতুন নোটিস পাঠানো হয় বলে খবর, যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শতাব্দীপ্রাচীন দল। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, 'আমাদের আর্থিক ভাবে পঙ্গু করে দিতে এইসব নোটিস পাঠানো হচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে কর-সন্ত্রাস বন্ধ করতেই হবে।'
কেন নোটিস?
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, তত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে নানা ভাবে অপব্যবহার করার অভিযোগ তীব্র হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, ইডি-সিবিআইয়ের পাশাপাশি সেই তালিকায় নাম উঠেছে আয়কর দফতরেরও। কংগ্রেসের উপর এমনিতেই ২০০ কোটি টাকার পেনাল্টি চাপিয়েছে আয়কর দফতর। তাদের বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট-ও 'ফ্রিজ' করা হয়েছে। স্বস্তি পেতে এই ট্যাক্স নোটিসগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু গত কাল, সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তার পর ফের নতুন নোটিস। এবার অঙ্কটা মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। ১৭০০ কোটি টাকা। কংগ্রেসের অভিযোগ, আগামী ১৭ এপ্রিল থেকে যে লোকসভা নির্বাচন শুরু হতে চলেছে, তার আগে এই ভাবে আর্থিক দিক থেকে তাদের শক্তিহীন করে ফেলতে চায় বিজেপি। সেই জন্য আয়কর দফতরকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ঘটনা হল, রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারের জন্য অর্থ সংগ্রহের প্রক্রিয়া এখন এমনিতেই বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্ট 'নির্বাচনী বন্ড' নিয়ে যে রায় দেয়, তার পর এই সমস্যায় কম-বেশি পড়তে হচ্ছে বহু দলকেই। তবে কংগ্রেস-সহ বিজেপি-বিরোধী শিবির সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানায়। পরে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশে 'নির্বাচনী বন্ড' সংক্রান্ত বিশদ তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু হলে দেখা গিয়েছে, এই অনুদান-প্রক্রিয়ায় সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছিল বিজেপি। তার পরে ছিল তৃণমূল। কংগ্রেসের ঘরে বরং অনুদানের অঙ্ক তুলনায় কমে। ভোটের মুখে 'নির্বাচনী বন্ড' নিয়ে এমন তথ্য বিজেপির ভাবমূর্তিতে আঘাত করতে পারে, আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলে। ঠিক এমন সময়েই অন্যতম প্রধান বিরোধী দল, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট 'ফ্রিজ' করা এবং বিপুল অঙ্কের পেনাল্টির জন্য পর পর নোটিস পাঠায় আয়কর দফতর। এর মধ্যে অন্য অঙ্ক নেই তো? হিসেব কষছেন অনেকেই।