নয়াদিল্লি: লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিল কংগ্রেস। বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর গতকাল লোকসভায় রাহুল গাঁধীকে তীব্র আক্রমণ করেন। বিরোধীরা যে জাতি-জনগণনার দাবি তুলছে, তার একেবারে অগ্রভাগে রয়েছেন রাহুল। সেই নিয়ে আক্রমণ শানিয়ে অনুরাগ বলেন, "যাঁদের নিজেদের জাতের ঠিক নেই, তাঁরাই জাতি জনগণনার দাবি তুলছেন।" সন্ধেয় অনুরাগের সেই ভাষণের প্রশংসা করেন মোদি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাষণের ভিডিও-ও পোস্ট করেন। সেই নিয়েই মোদির বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিল কংগ্রেস।


লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কে সুরেশ মোদির বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনার কথা জানান সর্বপ্রথম। তিনি বলেন, "গতকাল বাজেট অধিবেশন চলাকালীন, বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে অসংসদীয় ভাষার প্রয়োগ করেছেন। গোটা ভাষণে অপমানজনক ভাষায় কথা বলেছেন উনি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানাই। লোকসভার চেয়ারম্যান রেকর্ড থেকে অসংসদীয় ওই শব্দগুলি রেকর্ড থেকে বাদ দেন। কিন্তু গতকাল রাতে বাদ দেওয়া ওই অংশই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন মোদি, যা লোকসভার নিয়মের পরিপন্থী।" (Privilege Motion Against Modi)


এর পর লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে মোদির বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা দেন পঞ্জাবের জলন্ধরের সাংসদ চরণজিৎ সিংহ চান্নি। কংগ্রেসের অভিযোগ সংসদের যে অমর্যাদা করেছেন অনুরাগ, তাতে উৎসাহ জুগিয়েছেন মোদি। 


আরও পড়ুন: Anurag Thakur: 'জাতের ঠিক নেই' বলে আক্রমণ, অনুরাগের প্রশংসা মোদির, রাহুলের পাশে বিরোধীরা


সংসদের মর্যাদা এবং ন্যায়পরায়ণতা রক্ষার্থে, রক্ষাকবচ হিসেবে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেওয়া হয়। কোনও নেতা বা মন্ত্রী সংসদের মর্যাদা নষ্ট করলে, ক্ষমতার অপব্যবহার করলে এই নোটিস দেওয়া হয়। কোনও একজন সাংসদ বা অনেকে মিলে এই নোটিস দিতে পারেন। সংসদীয় আইনে এর আওতায় দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে অভিযুক্তকে। 


লোকসভার ২২ নং বিধির ২০ নং অধ্যায় এবং রাজ্যসভার ১৮৭ নং বিধির ১৬ নং অধ্যায়ে স্বাধিকার ভঙ্গের উল্লেখ রয়েছে। নোটিস আনা হলে লোকসভায় স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন বিষয়টি দেখেন। স্পিকার এবং চেয়ারপার্সন যদি মনে করেন অভিযোগের ভিত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের কাছে কৈফেয়ত চাওয়া হয়। ১৫ সদস্যের কমিটি গড়া হয়, যারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখেন এবং সেই মতো ব্যবস্থার সুপারিশ করে। আবার অভিযোগ খারিজও করে দিতে পারে ওই কমিটি।


এর আগে, রাফাল দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে জরুরি  ইন্দিরা গাঁধীর বিরুদ্ধেও স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিস আনা হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হন ইন্দিরা। স্বাধীন ভারতে একাধিক বার স্বাধিকার ভঙ্গের নোটি আনা হয়েছে সংসদে।