নয়াদিল্লি: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় ধরনের রদবদল কংগ্রেসে। দলের যাবতীয় সিদ্ধান্তগ্রহণের যে সর্বোচ্চ কমিটি, সেই কংগ্রেস ওয়র্কিং কমিটিতে (Congress Working Committee) জায়গা পেলেন শশী তারুর, সচিন পায়লট। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও জায়গা পেলেন CWC-তে। এবার উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব থেকে অব্য়াহতি দেওয়া হতে পারে তাঁকে। ৩৯ জন সদস্যের ওই কমিটিতে তারুর এবং পায়লটের জায়গা পাওয়াকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ বিগত কয়েক বছরে একাধিক বার বিক্ষুব্ধ হিসেবে উঠে এসেছে এই দু'জনের। তাঁদের হাতে সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা তুলে দেওয়া তাই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। (Congress Reshuffle)


তারুরের পাশাপাশি CWC-তে জায়গা পেয়েছেন আনন্দ শর্মাও। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় নাম ছিল তাঁরও। দলের সমস্যা নিয়ে সনিয়া গাঁধীকে যে ২৩ জন চিঠি দিয়েছিলেন, তাতে স্বাক্ষর ছিল আনন্দ, তারুরেরও। এর পর কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তারুর। কিন্তু তাঁকে হারিয়ে তাতে বিজয়ী হন মল্লিকার্জুন খড়্গে, যিনি গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।


তবে CWC-তে জায়গা পেয়ে রবিবার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তারুর। ট্যুইটারে (অধুনা X) তিনি লেখেন, 'কংগ্রেস এবং সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। কংগ্রেস ওয়র্কিং কমিটিতে মনোনীত হয়ে সম্মানিত বোধ করছি আমি। বিগত ১৩৮ বছর ধরে দলকে পথ দেখানোর কাজে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে CWC, তার অংশ হতে পেরে আমি সম্মানিত এবং কৃতজ্ঞ'।


আরও পড়ুন: Rahul Gandhi : "চিন আমাদের এক ইঞ্চিও জমি নিতে পারেনি...", প্রধানমন্ত্রীর দাবি নিয়ে কী বললেন রাহুল ?


একই ভাবে CWC-তে পায়লটের অন্তর্ভুক্তিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে তাঁর টানাপোড়েন এবং সংঘাতের কথা সর্বজনবিদিত। রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা পায়লট। কিন্তু গহলৌতের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। শোনা যায়, গত বিধানসভা নির্বাচনে পায়লটকে মুখ করেই জয়ী হয় কংগ্রেস। কিন্তু মুখ্য়মন্ত্রিত্বের প্রশ্নে গহলৌত দৌড়ে এগিয়ে যান। এর পর আড়াই বছর করে দায়িত্ব ভাগাভাগি হবে বলে ঠিক হয়। কিন্তু কুর্সি ছাড়তে রাজি হননি গহলৌত। সেই নিয়ে ২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহও করেন পায়লট। রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদও হারাতে হয় তাঁকে। কিন্তু রাহুল গাঁধীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত পায়লট। রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের আগে CWC-তে পায়লটের অন্তর্ভুক্তিকে তাই গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 


এর পাশাপাশি, CWC-তে অনেক নতুন মুখও জায়গা পেয়েছেন এবার। সেই তালিকায় রয়েছেন, দীপা দাসমুন্সি, সৈয়দ নাসির হুসেন। প্রাক্তন সাংসদ দীপা, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জস দাসমিুন্সির স্ত্রী। বাংলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী আগে থেকেই সদস্য ছিলেন। এবার দীপা জায়গা পেলেন। এখানে উল্লেখ্য, দীপা এবং অধীর দু'জনেই প্রবল তৃণমূল বিরোধী বলে পরিচিত। নাসির রাজ্যসভার সাংসদ। এর আগে কংগ্রেসের জাতীয় জনসংযোগ বিভাগের সদস্য ছিলেন তিনি। 


এবছরের গোড়ায় দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল তরুণদের কংগ্রেসে জায়গা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫০ বছর বয়সিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু বর্তমানে পায়লট, গৌরব গগৈ এবং কে পটেলের বয়সই ৫০-এর নীচে।