বীরভূম: মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের সাম্প্রতিক র‍্যাঙ্কিংয়ে আরও নীচের দিকে বিশ্বভারতীর স্থান। ১৩ ধাপ নেমে বিশ্বভারতীর স্থান ৫০ নম্বরে।


মানের এই অবনমনের জন্য পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে আশ্রমিকদের একাংশ আঙুল তোলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দিকে। শুক্রবার খোলা চিঠিতে কার্যত তারই জবাব দিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কর্মীদের একাংশকে দায়ী করে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, মান ধরে রাখার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার হেতু, বহির্বর্তীদের দৃষ্টিকোণে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের সহযোগের কার্পণ্য এবং বিশ্বভারতীর গঠনমূলক বিবিধ কর্মকাণ্ডের যথাযথ প্রতিবেদন অগোচরে থেকে যাওয়া।


পাশাপাশি, সহকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও করেছেন উপাচার্য। তিনি লিখেছেন, সহকর্মীদের অনেকে যাঁরা অ্যাকাডেমিক বা অন্যান্য কারণে অগ্রিম অর্থ নিয়ে রেখেছিলেন, তা ফেরত দিতে বলায় তাঁদের বিশেষ প্রীতিকর মনে হয়নি।


বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্য লিখেছেন, একজন অতিখ্যাত প্রাক্তন উপাচার্যের কার্যকালে নিয়োগপ্রাপ্ত ২৪ জনের নিয়োগের বিষয়টি দেখবার জন্য কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক আমাকে নির্দেশ দেয়। কেন না এই নিয়োগ ‘নিয়ম বহির্ভূত’ ছিল বলে অভিযোগ।







সঙ্গীত ভবনের অধ্যাপক সুমিত বসু বলেন, বিশ্বভারতীতে অনেক আগেই বেশ কিছু জনকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে, তা নিয়ে আমি উপাচার্য দফতরে চিঠিও দিই, এইসব কারণের জন্যই মান কমছে এবং উপাচার্য যে বক্তব্য খোলা চিঠিতে লিখেছেন তারমধ্যে উল্লেখও রয়েছে।

ছাত্র আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপাচার্য লিখেছেন, গত বছর আন্দোলনকারী ছাত্ররা আমাদের ২৫ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন। এমনকি আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে যাঁদের ইনসুলিন নিতে হয় তাঁদের তা নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি।


পড়ুয়াদের একাংশ অবশ্য উপাচার্যের এই বক্তব্য মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, উপাচার্য বিশ্বভারতী পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ, তাই এই ধরনের ভুলভাল কথা বলছেন।


তবে, তিন পাতার উপাচার্যের খোলা চিঠি প্রসঙ্গে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন অধ্যাপকদের একাংশ। বিদ্যাভবনের অধ্যক্ষ সর্বজিৎ সিংহ বলেন, উপাচার্য যেটা বলতে চেয়েছেন সেটার এটা প্রথম ধাপ, এরপর আরও অনেক বিষয় আছে যা পরে সামনে আসবে। উনি যে কাজগুলো করেছেন তাতে অনেকে রুষ্ট হয়েছেন। কিছু মানুষের আন্দোলন, বিক্ষোভে উনি আঘাত পেয়েছেন সেগুলো খোলা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।


উপাচার্যের খোলা চিঠি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক বিশ্বভারতীতে। এই নিয়ে উপাচার্যের বক্তব্য, ৩ পাতার চিঠিতে তিনি যা বলার বলেছেন। নতুন করে আর কিছু বলতে চান না।