পটনা: ফের দানা বাঁধল হিজাব-বিতর্ক (Hijab Controversy)। তবে কর্নাটকের (karnataka) উদুপি নয়, এবার বিতর্কের কেন্দ্রে বিহারের (bihar) মুজফফরপুর (Muzaffarpur)। সংবাদসংস্থা এএনআই-র মতে, রবিবার পরীক্ষা (Exam) চলাকালীন একদল কলেজ-পড়ুয়াকে তাঁদের হিজাব খুলে (remove) ফেলতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁরা সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে (leave) যেতে বলা হয়। এর পর থেকেই নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক।


কী ঘটেছে?
মহন্ত দর্শনদাস মহিলা কলেজ। মুজফফরপুরের মিথানপুরা এলাকার এই কলেজেই রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে। এক পড়ুয়ার অভিযোগ, তিনি হিজাব খুলতে অস্বীকার করেছিলেন বলে এক শিক্ষক তাঁকে আপত্তিজনক কথাবার্তাও বলেন। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছেন। কলেজের অধ্যক্ষ কানু প্রিয়াকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, 'আমি পরীক্ষাকেন্দ্রে ছিলাম না। তবে বাকি যে পরীক্ষার্থীরা ছিলেন, তাঁরা বলেছেন সবটা মিথ্যা।' অধ্যক্ষার দাবি, আসল সমস্যা হিজাব নয়। বহু পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছিলেন যা নিয়ম-বিরোধী। 'শিক্ষক তথা পরীক্ষার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক শুধু অভিযোগকারিণী পরীক্ষার্থীকে তাঁর কান দেখাতে বলেছিলেন। ওই পড়ুয়ার কাছে কোনও ব্লু-টুথ ডিভাইস রয়েছে কিনা সেটাই দেখতে চেয়েছিলেন তিনি', সংযোজন কানুপ্রিয়ার। এতেই গণ্ডগোল। হঠাতই পুলিশ স্টেশনে ফোন করে বসেন ওই পরীক্ষার্থী। কয়েক জন স্থানীয় দুষ্কৃতী যাদের সঙ্গে সম্ভবত তাঁর আগে থেকে পরিচয় ছিল, তাদেরও ফোন করা হয়। দাবি কলেজের। তারা এসে পৌঁছলেই গণ্ডগোল শুরু হয়। অধ্যক্ষার মতে, 'যদি সত্যি সমস্যা হত তা হলে ওই পড়ুয়া আমাকে জানাতে পারতেন। পরীক্ষা নিয়ামকেরও দ্বারস্থ হতে পারতেন। কিন্তু ওঁর অন্য উদ্দেশ্য ছিল।' মিথানপুরার স্টেশন হাউস অফিসার শ্রীকান্ত সিনহা জানান, দু-পক্ষকেই বসিয়ে বোঝানো হয়েছে। পরীক্ষাও শান্তিমতো হয়েছে। এই মুহূর্তে এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন নেই। তবে এখনও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে প্রশাসন।


বিতর্ক আগেও...
বিজেপি শাসিত কর্নাটকে স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিয়ে অশান্তি বাধে। তাতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে। সেই নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে গোটা রাজ্যে। বিষয়টি আদালতে পৌঁছয়। হাইকোর্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছয় বিষয়টি। কিন্তু সেখানেও দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়েছেন বিচারপতিরা। এক দিকে, হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে জমা পড়া আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত। সঙ্গে একাধিক প্রশ্নের কথাও বলেন তিনি। যেমন পড়ুয়ারা কী পোশাক পরবেন, তা কলেজ কর্তৃপক্ষই কি ঠিক করবেন, হিজাব নিষিদ্ধ হওয়ায় সংবিধানে উল্লেখিত ধর্মাচরণের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা, এই প্রশ্নগুলির কথা বলেন বিচারপতি গুপ্ত। এ ছাড়াও সরকারি নির্দেশে নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার খর্ব হচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নও রয়েছে বলে জানান। বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া আবার হিজাব পরায় অনুমতি দেন। হিজাব পরা, না পরা ঐচ্ছিক বলে জানান তিনি। ফলে প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের উপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে। 


আরও পড়ুন:শিবপুরে আরও ৬ কোটির হদিশ, হাওড়ায় গাড়ির পর বাড়িতেও 'গুপ্তধন'