কলকাতা: ২ টি নয়, পরপর ৩ টি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। শালিমার-হাওড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Express Derailed) পাশাপাশি বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে একটি মালগাড়ি ও হাওড়া-বেঙ্গালুরু যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ট্রেনও লাইনচ্যুত হয়েছে।


যে কজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং যাত্রীরা দুর্ঘটনার পরে কথা বলতে পেরেছেন। তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার কাছাকাছিই রয়েছে লোকালয়। ফলে দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রাই ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধারকাজে। প্রত্যক্ষদর্শী, যাত্রীদের কয়েকজন জানাচ্ছেন, স্থানীয় বাসিন্দারাই টর্চ হাতে এসে পৌঁছন ঘটনাস্থলে। তখন চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোথাও কিছু দেখা যাচ্ছিল না। লাইন উপড়ে এদিক ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে পরপর বগি। মালগাড়ির উপর উঠে গিয়েছে করমন্ডল এক্সপ্রেসের কামরা। পাল্টি খেয়ে পড়ে রয়েছিল একাধিক কামরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ভিতর থেকে অনেকেই চিৎকার করছিলেন। 


তখনই উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্ধকারের মধ্যে হাতে টর্চ নিয়ে শুরু করা হয় উদ্ধারকাজ। তাঁরাই অনেককে ট্রেন থেকে বের করেন। যতটা পারেন সাহায্য করেন। টর্চ সম্বল করেই উদ্ধারকাজ চলেছে। জখমদের উদ্ধার করে চিকিৎসার চেষ্টা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, 'দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়রা ছুটে এসেছেন বলে জানান তিনি। তাঁরাই তাঁদের বের করে, রেললাইন ধরে হাঁটিয়ে কিছুটা দূরে নিয়ে এসেছেন।'রেলের তরফে এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি। কীভাবে উদ্ধার হবে, তা নিয়ে রেল এখনও কিছু করছে না। এমনটাই অভিযোগ শালিমার ও করোমন্ডল এক্সপ্রেসের এক যাত্রী রূপম বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দিকে কিছু ছিল না। পরে কয়েকটা হ্যালোজেন লাইটের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি আরও বলেন, 'যতবার দাঁড়াবার চেষ্টা করছি। ততবারই পড়়ে যাচ্ছি। কোনদিকে বগি হেলে যাচ্ছে বুঝতে পারছি না। কিছু বুঝতে পারছি না। কীভাবে বেরিয়েছি নিজেও জানি না। যতদূর চোখ যাচ্ছে ততদূর হেলে পড়ে রয়েছে বগিগুলি।'


বেশ কিছুক্ষণ পরে হ্যালোজেনের ব্যবস্থা করা হয়। বাকি উদ্ধারকাজের সামগ্রী আনা হয়। এসে পৌঁছয় রেলের উদ্ধারকারী দল। পৌঁছয় অ্যাম্বুল্যান্স, গ্যাস কাটার আসে। গ্যাস কাটার দিয়ে কামরা কেটে বের করা হয় আটকে পড়াদের। উদ্ধার হয় দেহও। রাত দশটা পর্যন্ত শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই আশঙ্কা, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। 


আরও পড়ুন: ঘটনাস্থলে যাচ্ছে রাজ্যের টিম, ট্রেন দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর