কলকাতা: ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে! শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সংখ্যাটা ২৯৫। যা ছাপিয়ে গিয়েছে ২৪ বছর আগের গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহতাকেও। এবিপি আনন্দে করমণ্ডল বিপর্যয়ের খবর দেখে তাই শিউরে উঠেছেন উত্তর দিনাজপুরের গাইসালের নরেন দাস, মহম্মদ বাদালুরা।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যু, আহত অন্তত ৬৫০। ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা জারি রয়েছে। কী ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল ৩টি ট্রেন, বাড়ছে রহস্য। এখনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরা থেকে বের করা হচ্ছে দেহ। মৃত ও আহতর সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কিন্তু করমণ্ডলের এই দুর্ঘটনা ছাপিয়ে গিয়েছে গাইসলের ঘটনাকেও।
প্রসঙ্গ গাইসল
২ অগাস্ট ১৯৯৯। ২৪ বছর আগের ভয়ঙ্কর এক রাত। উত্তর-দিনাজপুর বিহার সীমানার ছোট্ট গ্রাম গাইসালের নির্ঘুম রাত কেটেছিল সেদিন। ঠিক যেমন শুক্রবারের রাত কেটেছে ওড়িশার বাহানাগা গ্রামের বাসিন্দাদের। সেদিন ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল গাইসলের ট্রেন দুর্ঘটনায়, আর সেই সংখ্যা ছাপিয়ে গেল করমণ্ডলের বিভীষিকা।
ওড়িশার বাহানাগার রেল দুর্ঘটনার এই ভয়বহতা, কাঁপিয়ে দিয়ে গেল ৭০৭ কিলোমিটার দূরে গাইসলের মহম্মদ বাদালু, নরেন দাসদের। উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা মহম্মদ বাদালু বলেন, 'রাত ২-টো নাগাদ প্রচণ্ড আওয়াজ পাই, ভেবেছিলাম বোমা ফেটেছে। তারপর গ্রামের লোক একত্রিত হয়ে স্টেশনে আসে। সেখানে দেখে একটা বগির ওপর ৪টে বগি পরপর উঠে গিয়েছিল। সবচেয়ে উপরের বগি তারে লেগে পুড়ে যায়। বডিগুলো বালির মতো ঝুরঝুর করে পড়ছিল।'
গাইসাল স্টেশনের পিছনেই নরেন দাসের চায়ের দোকান। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার খবরটা শোনার পরে রাতভর দু-চোখের পাতা এক করতে পারেননি। তিনি বলেন, 'প্রতিদিনের মতো ১০টায় দোকান বন্ধ করে গিয়েছিল...দৌড়ে এলাম স্টেশনে, দেখলাম সব দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ততক্ষণে জিআরপি আর আরপিএফ আর বিএসএফ চলে এসেছিল...তারা কাটার দিয়ে কেটে বডি বের করে...কখনও জল চাইছিল...গতকালের ঘটনা সেটা আবার মনে করিয়ে দিল আমাদের...আমরা তখন স্টেশনে আসতাম না ভয়ে।
কিছু ঘটনা আমাদের জীবনে এমন গভীর দাগ কেটে যায় যে, চাইলেও সেই দাগ মোছা যায় না! গাইসাল থেকে বাহানাগা - সেই কঠিন বেদনাদায়ক স্মৃতিরই যাত্রাপথ!
আরও পড়ুন, 'রেল আমার কাছে সন্তানের মতো, রেলমন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে রাজি', করমণ্ডল দুর্ঘটনায় মন্তব্য মমতার