বালেশ্বর: বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্য়া। এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৬৫০ যাত্রী। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি আসছে, আক্ষরিক অর্থেই চোখে দেখা যাচ্ছে না সেই সব (Coromandel Express Accident)। ট্রেনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র (Anti Collison Device) কেন ছিল না, সিগনাল কেন মিলল না, এমন একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। সেই আবহে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর (Ashwini Vaishnaw) পদত্যাগের দাবি উঠছে (Odisha Train Accident)।
সরকারের তরফে এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য না করা হলেও, এ নিয়ে অতীতের নিদর্শন উঠে আসছে। কারণ অতীতে ট্রেন দুর্ঘটনার নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে দেখা গিয়েছে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী (Lal Bahadur Shastri)থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মতো রাজনীতিককে।
আরও পড়ুন: ACD ছিল না কেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্য়া ঠিক কত? রেলমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ মমতার
লাল বাহাদুর শাস্ত্রী
১৯৫৬ সালে তামিলনাড়ুর আরিয়ালুর ট্রেন দুর্ঘটনার সময় দেশের রেলমন্ত্রী ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সে বার দুর্ঘটনায় মারা যান ১৪২ জন যাত্রী। সেই দুর্ঘটনার নৈতিক দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছিলেন শাস্ত্রী। তাঁর এই পদক্ষেপ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন শাস্ত্রীর। সেই ঘটনাই ভারতীয় রাজনীতিতে শাস্ত্রীর জনপ্রিয়তা রাতারাতি বাড়িয়ে তোলে। পরবর্তী কালে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি।
নীতীশ কুমার
১৯৯৯ সালের অগাস্ট মাসে অসমে গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে ২৯০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। সেই সময় দেশের রেলমন্ত্রী ছিলেন নীতীশ কুমার। নৈতিক দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
২০০০ সালে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Atal Bihari Vajpayee)। সে বছর দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ী মমতার পদত্যাগ গ্রহণ করেননি।
সুরেশ প্রভু
চারদিনের মাথায় দু’-দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনা। মারা যান ১৫০ জন যাত্রী। তাতে ২০১৭ সালে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন সুরেশ প্রভু। নৈতিক দায়স্বীকার করে এমন পদক্ষেপ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি সরকার তাঁকে অপেক্ষা করতে বললেও, সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন প্রভু।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্য়া। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র (Anti Collison Device) ছিল না, সিগনাল মেলেনি বলে অভিযোগ উঠছে। এমনকি উদ্ধারকার্য নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়েও রাখঢাকের অভিযোগ উঠছে। সেই আবহে রেলমন্ত্রী বৈষ্ণোর পদত্যাগের দাবি তুলছেন বিরোধীরা। যদিও কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।