হুগলির ডানকুনিতে দিল্লি রোডের ওপর একটি দোকানের সামনে টেবিল পেতে বসে পড়েছেন মাবুদ। চলছে গোবর, গোমূত্র বিক্রি। রীতিমত পেশাদারি ভঙ্গিতে ব্যবসা চালাচ্ছেন মাবুদ, মুড়ি মিছরির মোটেই একদর নয় তাঁর কাছে। গাই গরুর মূত্র ৪০০ টাকা প্রতি লিটার, বকনার ৫০০ টাকা প্রতি লিটার। গোবরও ৫০০ টাকা কেজি। জার্সি গরু খাঁটি দিশি নয়, ভেজাল আছে। তাই তার মূত্রের অত কদর নেই, দাম যাচ্ছে ৩০০ টাকা লিটার করে। গোবরও তাই, ৩০০ টাকা/কেজি। তবে দাম নিয়ে চাপাচাপি নেই, কেউ কেনার আগ্রহ দেখালে ৩০০ টাকার গোমূত্র ২০০ টাকা ডিসকাউন্ট দিয়ে ১০০ টাকায় ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি।
মাবুদ ব্যবসা নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস। কাগজে ইংরেজি, বাংলায় লিখে টাঙিয়ে দিয়েছেন, তাঁর এই গোমূত্র, গোময় করোনা সারানোর মহৌষধ। পরীক্ষা প্রার্থনীয়। মুখে শুধু বলছেন না, কেউ কৌতূহলী হয়ে দেখতে এলে ছোট্ট গ্লাসে করে মুখে ঢুকু ঢুকু ঢেলেও দিচ্ছেন তিনি, সঙ্গে দরাজ আশ্বাস, করোনা সেরে যাবে। ইতিমধ্যেই ২ জন কিনে ফেলেছেন তাঁর ‘ওষুধ’, অন্যরা চেখে দেখেছেন, জানিয়েছেন, পছন্দ হলে কাল এসে কিনবেন।
মাবুদের দুধের ব্যবসা। নিজেই জানাচ্ছেন, হিন্দু মহাসভার গোমূত্র পার্টি তাঁকে ব্যবসা বাড়ানোর বুদ্ধি দিয়েছে। গরুদুটোর কিছুই আর ফেলা যাচ্ছে না, দুধ, গোবর, গোমূত্র সব ঝেড়ে পুঁছে বেচে দিচ্ছেন। বিশ্বাস, ঠিকমতো বাজার ধরতে পারলে কদিনের মধ্যে লাল হয়ে যাবেন। কপালে লাল টিকা দিয়ে খদ্দেরও চলে এসেছেন। নাম দ্বারিকানাথ ঝা। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, গোময়, গোমূত্র সেবনে মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসে, পেট পরিষ্কার হয়, টিবি সারে, শ্বাসের অসুখ সেরে যায়। তবে হ্যাঁ, খেতে হবে খালি পেটে। মাবুদ এই দোকান খুলে বসার বেজায় তৃপ্ত দ্বারিকানাথ, তাঁকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন তিনি।