রাষ্ট্রসঙ্ঘ: করোনা তছনছ করে দিচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাম্প্রতিকতম বাণিজ্যিক রিপোর্ট বলছে, গোটা বিশ্বের উপার্জন এ বছর মার খেতে পারে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু সম্ভবত এই মন্দা সামলে নেবে ভারত ও চিন।


রাষ্ট্রসঙ্ঘের বাণিজ্য সংক্রান্ত সংগঠন ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ইউএনসিটিএডি বলছে, যে সব দেশের অর্থনীতি মূলত রফতানির ওপর নির্ভরশীল, তারা এই করোনা সংক্রমণে অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আগামী ২ বছরে মার খাবে অন্তত ২-৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ। সাম্প্রতিক কালে উন্নত দেশগুলি এবং চিন এই সব দেশগুলিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে, এই সব অর্থনীতিকে বাঁচাতে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার সাহায্য দেবে তারা। রাষ্ট্রসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে, এটি একটি অভূতপূর্ব সঙ্কটের অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া, যা শারীরিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক দিক থেকে ধাক্কার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেবে।

এই সাহায্যমূলক আর্থিক প্যাকেজের খুঁটিনাটি এখনও জানা না গেলেও প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হিসেব বলছে, বৃহৎ জি২০ অর্থনীতিগুলিকে ১-২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য করবে তারা। এরপর আগামী ২ বছরের বেশি সময় ধরে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে দেবে আরও ২.৩ ট্রিলিয়ম ডলার। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির পড়তির জেরে বেশিরভাগ দেশের কোষাগারের অবস্থা শোচনীয় হবে, একইভাবে কড়াকড়ি হবে বিদেশি মুদ্রা বিনিময়ে। এই পরিস্থিতিতে ভারত ও চিন কীভাবে এমন মন্দা বাঁচাতে পারবে তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি এই রিপোর্ট। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা চতুর্মুখী পরিকল্পনা নিয়েছে। ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পিছিয়ে থাকা দেশগুলির অর্থনীতিতে ঢালা হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলির ১ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ ফেরত নেওয়া এ বছরের জন্য স্থগিত করা হবে ও ৫০০ বিলিয়ন ডলারের মার্শাল প্ল্যান সেই সব পরিকল্পনাগুলির জন্য, যেগুলিতে উন্নত দেশগুলির টাকা ঢালার কথা ছিল কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি।

রাষ্ট্রসঙ্ঘ বলেছে, করোনার জেরে যে আর্থিক পতন হয়েছে তা এখনও চলছে, ঠিক কোন পথে পরিস্থিতি এগোচ্ছে, তা আগে থেকে বোঝা সম্ভব নয়, ২০০৮-এর আন্তর্জাতিক মন্দার থেকেও পরিস্থিতি খারাপ হতে চলেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলি এই মন্দার মূল শিকার হবে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চিনে এই ভাইরাস সংক্রমণের ২ মাসের মধ্যে মূলধনের দিক দিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলি মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের টাকার দাম পড়ে গিয়েছে, রফতানি কমে গিয়েছে, জিনিসপত্রের দাম থেকে পর্যটনক্ষেত্র থেকে আয়- সবেতেই বিরাট লোকসানের মুখোমুখি হয়েছে তারা।