কলোরাডো : হাওয়ার মাধ্যমে ছড়াচ্ছে করোনা। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, SARS CoV-2 Virus প্রধানত হাওয়াতেই ধারাবাহিকভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এর উপযুক্ত প্রমাণও হাতে এসেছে গবেষকদের।    


বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আমেরিকা, ব্রাজিল, ভারতে ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী করোনা চিত্র। এ দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। আগে হাঁচি, কাশি থেকে বাঁচতে চলছিল মাস্কের ব্যবহার। এরই মধ্যে গবেষকরা বলছেন, নীরবে উপসর্গহীন ও প্রাথমিক উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের থেকে হাওয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে SARS CoV-2 Virus তার জন্য তাদের হাঁচি, কাশি বা নাক দিয়ে জল পড়ার কোনও প্রয়োজন হচ্ছে না।


ব্রিটেন, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গবেষণায় ধরা পড়েছে, মূলত হাওয়া থেকেই ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। ৪০ শতাংশ এই মারণভাইরাস কেবল উপসর্গহীন লোকেদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। গবেষকরা দেখেছেন, খুব দ্রুত বাতাসের মাধ্যমেই এই রোগ বিশ্বে ছড়াচ্ছে। যাকে রোখা একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। তবে বাতাসের বড় ড্রপলেটগুলি মাটিতে পড়ে কোভিড ছড়াতে পাড়ে, এরকম কোনও প্রমাণ তাদের হাতে নেই।


বায়ুবাহিত এই গবেষণার সপক্ষে 'কোঅপারেটিভ ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস'-এর কেমিস্ট জোসে লুই জিমেনেজ বলেন, ''খুব দ্রুত এই বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO ছাড়াও অন্যান্য হেলথ এজেন্সির দেখা উচিত। জনগণকে সচেতন করার সময় বায়ুবাহিত এই সংক্রমণের বিষয়টি সবার নজরে আনা উচিত তাদের। তাহলেই সংক্রমণের গতিতে বাধ দেওয়া যাবে।''


গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোনও ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ালে সহজেই তা পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভাইরাসে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি কথা, গান বা জোরে চিৎকার বা নিশ্বাস ছাড়লে সেই বায়ুকণা থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়। তাহলে এই সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়? গবেষকদের মতে, ভেন্টিলেশন, এয়ার ফিল্টারেশনই এর থাকা বাঁচার পথ। এমনকী এই পরিস্থিতিতে ঘরে থাকলেও সবার মাস্ক পরে থাকাটাই বাঞ্ছনীয়।সেক্ষেত্রে মাস্কের কোয়ালিটির দিকেও নজর দিতে হবে। কেউ সংক্রমিত ব্যক্তির কাছে গেলে পিপিই পরাটা বাধ্যতামূলক। অন্যথায় নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন তিনি।


ইতিমধ্যেই বায়ু থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছে গবেষকদের দল। সেখানে তাদের সুপার স্প্রেডার-এর তালিকায় 'Skagit Choir Outbreak'-কে প্রধানভাবে দায়ী করা হয়েছে। যেখানে ৫৩ জন মাত্র একজনের থেকে সংক্রমিত হন। আসলে এই কয়্যার হল গানের দল। গত বছরের ১৭ মার্চ এই বিষয়টি সবার নজরে আসে। যেখানে স্কেগিটের ১২২জনের গানের দল থেকে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস। যা পরবর্তীকালে ভয়ানক আকার ধারণ করে।


নতুন এই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বাইরের থেকে ঘরের ভিতরে সংক্রমণের হার বেশি। তবে ঘরে ভেন্টিলেশন ভালো হলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কম।