ঝিলম করঞ্জাই ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: একদিকে আশা, অন্যদিকে আশঙ্কা! নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে চিনা গবেষণায় উঠে এল দুটোই। তাপমাত্রা বাড়লেই প্রভাব কমে এই ভাইরাসের, দাবি করেছেন একদল গবেষক। অন্য গবেষকদের দাবি, ক্রমাগত জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে এই ভাইরাস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আন্টার্কটিকা বাদে বাকি ছ’টি মহাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে নোভেল করোনাভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার। করোনার ভয়ে ঘাম ছুটেছে চিন, আমেরিকার মতো তাবড় শক্তিশালী দেশের। সকলে জানতে চাইছেন, এই মারণ ভাইরাসের থাবা থেকে কীভাবে বাঁচা সম্ভব? এই প্রেক্ষাপটে কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছে চিনের একটি গবেষণার রিপোর্ট। সান ইয়াৎ সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের দাবি, তাপমাত্রা বাড়লে করোনাভাইরাসের ওপর তার প্রভাব পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে বেশি তাপমাত্রায় এই ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

ভারতে এখন গরম পড়তে শুরু করেছে। তাই চিনের এই গবেষণার রিপোর্টের ভিত্তিতে আশাবাদী চিকিৎসকরা। তাঁরা মনে করছেন, গরম বাড়লে করোনার প্রভাব কমবে, এখন যেভাবে ছড়াচ্ছে ততটা ছড়াবে না।

তবে এক গবেষণা যখন আশার আলো দেখাচ্ছে, তখন আর এক গবেষণা আবার উল্টো কথা বলছে। চিনেরই পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ লাইফ সায়েন্সেসের একদল গবেষক দাবি করেছেন, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে এই ভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। প্রধানত দুটো প্রজাতিতে নিজের বিবর্তন ঘটাচ্ছে করোনা। গবেষকরা এদের নাম দিয়েছেন এস আর এল। এই এল প্রজাতির ভাইরাস আরও মারাত্মক আকার নিচ্ছে, এর সংক্রমণের হারও অনেক বেশি।

এই তথ্য সামনে আসায় চিন্তিত চিকিত্‍সকরা, তাঁদের বক্তব্য, মিউটেশন ঘটিয়ে বিপজ্জনক আরও হয়ে উঠেছে করোনা, আর কী কী পরিবর্তন করবে তা বোঝা যাচ্ছে না। আর জিনগত পরিবর্তনের ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মত এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতেও বেগ পেতে হবে।

আবহাওয়া বদলের সময় এখন ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি লেগেই রয়েছে। এসব আবার করোনারও উপসর্গ। চিনের উহান প্রদেশে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সেখানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৯৮ শতাংশের উপসর্গ ছিল জ্বর, ৭৬ শতাংশের ক্ষেত্রে উপসর্গ ছিল শুধু কাশি আর ৪৪ শতাংশের ক্ষেত্রে শুধু পেশিতে যন্ত্রণা।

ফলে অনেকেরই রাতের ঘুম উড়েছে। সাধারণ জ্বর কাশি হলেও মনে হচ্ছে, করোনা নয় তো?