দিল্লি : দেশজুড়ে অক্সিজেনের সঙ্কট। ঘাটতি মেটাতে এবার জার্মানি থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে  জানানো হয়েছে, জার্মানি থেকে বিমানে মোট ২৩টি মোবাইল অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্ট দেশে আনা হচ্ছে ।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেন সঙ্কটে ভুগছে দেশ। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে অবশেষে বিদেশের শ্মরণাপন্ন হয়েছে কেন্দ্র। মন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ঢুকবে এই প্ল্যান্টগুলি। যা সাময়িকভাবে অক্সিজেনের অভাব পূরণ করবে বলে আশাবাদী কেন্দ্র।


চলতি সপ্তাহের শুরুতেই কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই কোভিড হাসপাতালগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। পাশাপাশি কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন কর্মকর্তাদের তা অবিলম্বে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন । যত শীঘ্র সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দেন তিনি।


রাজধানীতে অক্সিজেনের ঘাটতি এই মুহূর্তে সর্বাধিক। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাট, তামিলনাড়ু, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকেও অক্সিজেনের চাহিদা তুঙ্গে।


হিসাব অনুযায়ী, ভারতে এই মুহূর্তে অক্সিজেন উৎপাদনের ক্ষমতা দিন প্রতি ৭ হাজার মেট্রিকটন। লাভ হচ্ছে না তাতেও। অক্সিজেন সঙ্কট সামাল দিতে কার্যত জেরবার দেশ। হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামলাতে তাই অ্যামেরিকা , জার্মানি, জাপান, ইটালি-সহ মোট ৬টি দেশ থেকে অক্সিজেন আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।


শহরের বিভিন্ন জায়গায় হন্যে হয়ে খোঁজ করেও অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করতে পারছেন না রোগীর পরিজনরা। রাজ্য তথা গোটা দেশের ছবিটা একইরকম। পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান বাজারে প্রায় নেই বললেই চলে।


এদিন কোভিডে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিল্লির আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের জোগান বাড়াতে আবেদন করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল । অক্সিজেনের ঘাটতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অক্সিজেন সরবরাহ যাতে ঠিকঠাক থাকে, সে বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।


বলার অপেক্ষা রাখে না আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিদিনই সংক্রমণে রেকর্ড গড়ছে দেশ। লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৩২,৭৩০। যা কার্যত সর্বাধিক। একে করোনার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, অন্যদিকে দেশজুড়ে অক্সিজেনের ঘাটতি চিন্তা বাড়াচ্ছে।