হাওড়া: প্রায় ৫০ ঘণ্টা পরে লিলুয়ায় করোনা রোগীর মৃতদেহ উদ্ধার। রেল হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ নিয়ে গেল স্বাস্থ্যদফতর। আগে থেকে রেল থেকে কোনও খবর দেওয়া হয়নি। রেলের অভিযোগ উড়িয়ে দাবি প্রাক্তন কাউন্সিলরের। এব্যাপারে এখনও রেলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বেলুড়ের বিভূতিভষণ বন্দ্যোপাধ্যায় লেনের বাসিন্দা কার্তিকচন্দ্র বাইন অবস্থার অবনতি হওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীকে শনিবার একটি নার্সিংহোম থেকে লিলুয়া রেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দুপুর একটায় ভর্তির দুঘণ্টার মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর থেকে মর্গেই পড়ে থাকে দেহ।
করোনাকালে চরম অব্যবস্থার ছবি ধরা পড়ল লিলুয়ার পূর্ব রেলওয়ে হাসপাতালে। শনিবার বিকেল ৩টে থেকে ৪৮ ঘণ্টা হাসপাতালের মর্গে পড়ে রইল এক করোনা রোগীর মৃতদেহ। সৎকারের দায় কার, তা নিয়ে চলল টানাপোড়েন। লিলুয়া পূর্ব রেলওয়ে হাসপাতাল সুপার গোপা মজুমদার বলেন, আমি শুধু জানি এক পেশেন্ট মারা গিয়েছে। প্রশেস মেনে পুরসভা, স্টেট অথরিটিকে জানিয়েছি। এই বডি ডিজপোজাল হয় অ্যাকর্ডিং টু স্টেট অথরিটিজ গাইডেন্স। কোনও কোভিড পরিকাঠামো নেই বলে দায় সেরেছেন তিনি।
যদিও রেল হাসপাতালের সুপারের দাবি নস্যাৎ হয়ে গিয়েছে হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্যে। এবিষয়ে জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, জেলা স্বাস্থ্য দফতরে এবিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। আমাকেও কেউ কিছু জানায়নি। সুপার যদি যোগাযোগ করেন আমরা মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে দেব।
এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা অবস্থায় পড়ে মৃতের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, রেল হাসপাতালের তরফে পারিবারিক উদ্যোগে দেহ সৎকারের জন্য বারবার চাপ দেওয়া হয়। সেইমতো চেষ্টাও করেন তাঁরা। কিন্তু সেখানেও ফড়েদের দাপট। অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া ও তা সৎকারের জন্য ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। মৃত করোনা রোগীর জামাই শত্রুঘ্ন পণ্ডিত বলেন, হাসপাতাল থেকে প্রেসার। একটা নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ১০ থেকে ১৫ হাজার চাইছে।
শেষ পর্যন্ত এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুরসভার কোভিড শববাহী গাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই গাড়িতে কার্তিক বাইনের মৃতদেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রেল হাসপাতালের সুপারের দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর।