রাঁচি: ১৬ দিনের ব্যবধানে করোনায় কাড়ল একই পরিবারের ৬ জনের প্রাণ। মর্মান্তিক ও পিলে চমকে দেওয়ার মতো ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে। কোভিড-১৯ সংক্রমণে এক এক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধা মা ও তাঁর পাঁচ-পাঁচটি ছেলে। এই ঘটনায় গোটা শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জারি করা হয়েছে সতর্কতা।


জানা যাচ্ছে, ৮৮ বছরের ওই বৃদ্ধা দিল্লিতে এক অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পর তিনি অসুস্থ হলে তাঁকে বোকারো-র এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। গত ৪ জুলাই তিনি মারা যান।


শেষকৃত্যের জন্য বৃদ্ধার দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। পরে, জানা যায় বৃদ্ধা করোনা পজিটিভ। প্রথা অনুযায়ী, কোনওপ্রকার নিরাপদ দূরত্ববিধি না মেনে মায়ের শেষকৃত্য সেরে ফেলেছেন ছেলেরা। রিপোর্ট পেয়ে সকলে চমকে ওঠেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। করোনা প্রবেশ করে ফেলেছে বাসায়।


একে একে সংক্রমণ ধরা পড়ে ছেলেদের শরীরে এবং তাঁরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। প্রথমে এক ছেলে, তারপর আরেক, পরে আরও এক... এক-এক করে পাঁচ ছেলের মৃত্যু হয় কোভিড-১৯ সংক্রমণে। আরও ভয়ের, ৬ জনের মৃত্যু হয় ১৬ দিনের ব্যবধানে। পঞ্চম ছেলের মৃত্যু হয়েছে সোমবার।


বর্তমানে বৃদ্ধার ষষ্ঠ ছেলে ও পরিবারের আরও ২ সদস্য জীবিত। তাঁদেরকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে প্রশাসন। সকলেই হাসপাতালে ভর্তি। তবে, আরোগ্যলাভের পথে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানান, মৃতরা সকলেই ৬০ বছরের ঊর্দ্ধে। তাছাড়া, তাঁদের শরীরে অনেক ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছিল।


এই ঘটনায় সেখানকার মানুষ স্বাভাবিক কারণেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। জেলা প্রশাসন বিষয়টি শোনার পরই এলাকায় অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করেছে।ধানবাদের রাস্তায় বিনা প্রয়োজনে ইতিউতি ঘুরে বেড়ানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।


যে এলাকার ঘটনা এটি, সেই কাটরাসের রাস্তায় মানুষকে বেরোতেই দিচ্ছে না পুলিশ। আবার, ধানবাদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যে সীমান্ত রয়েছে তাও আপাতত পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝাড়খন্ডে ২২৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৬ জন। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৮৮৯। মোট মারা গিয়েছএন ৫৫ জন। সর্বাধিক আক্রান্ত জেলা রাঁচি ও গড়বা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৭১ এবং ৩৫।