হায়দরাবাদ : করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছিলেন পরিবারের লোকজন। যদিও এই দূরত্ব সহ্য হয়নি শাশুড়ি মা-র। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে খোদ বউমাকেই জড়িয়ে ধরলেন তিনি। যার জেরে সংক্রমণের আশঙ্কায় তেলেঙ্গানায় তোলপাড় হল 'শাশুড়ি-বউমার সংসার'।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব অন্যতম হাতিয়ার। করোনাকালে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবার থেকেই 'সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং' বজায় রাখুন। সেখানে খাস পরিবারের সদস্যকেই সংক্রমিত করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল শাশুড়ির বিরুদ্ধে। তেলেঙ্গানার রাজন্যা সিরিসিলা জেলার এই ঘটনা অবাক করেছে অনেককেই।
অভিযোগকারী বউমার বক্তব্য, ''জোর করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছেন শাশুড়ি। বার বার বলছেন, আমি মরলে তুই সুখী হবি ! তোকেও যেন ভাইরাসে ধরে।'' স্থানীয় স্বাস্থ্য আধাকারিকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে ওই পরিবারে। বউমার দাবি, কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর থেকেই শাশুড়ির থেকে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখতে শুরু করেন তিনি ও তাঁর সন্তানরা। যা ভালো চোখে দেখেননি শাশুড়ি মা। বাড়িতে তাঁকে আলাদা রাখা হলে অপমানিত বোধ করেন তিনি। যা নিয়ে মনে মনে ক্ষোভ জমতে শুরু হয় তাঁর। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সম্প্রতি, যখন তাঁকে জড়িয়ে ধরে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন শাশুড়ি।
বউমার আরও দাবি, তাঁকে জড়িয়ে ধরার পাশাপাশি সন্তানদেরও জোর করে আদর করেছেন শাশুড়ি। যা ঘুম ছুটিয়েছে তাঁর। বহুবার নিষেধ করা সত্ত্বেও এই কাজ করেছেন তিনি। ক্ষোভের বশে তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের ক্ষতি করতে চাইছেন শাশুড়ি মা। বাধ্য হয়েই তাই শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করেছেন তাঁরা। বর্তমানে থিমাপুর গ্রামে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন অভিযোগকারী।
এদিকে, এই খবর সামনে আসতেই ওই মহিলার বাড়িতে আসেন ইয়েল্লারেড্ডিপেটার মণ্ডল উন্নয়ন আধিকারিক ও হেলথ অফিসার। তাঁদের অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর জোগান দেন তাঁরা। ২০ বছরের ওই অভিযোগকারী মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী ট্রাক্টর চালক। ওড়িশায় থাকেন তিনি। চার বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। সেই থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকেন তিনি। ঘটনার পর থেকেই প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের পাশে পেয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে শাশুড়ির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।