নয়াদিল্লি:   বিশ্ব জুড়ে করোনা টিকার এক এক রকম দাম হবে। মঙ্গলবার এমনই জানিয়েছে বিশ্বের অন্যতম ওষুধ প্রস্ততকারী সংস্থা ফাইজার। তবে তাদের তৈরি টিকা সহজলভ্য করাই মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে তারা। সেজন্য দামের এই ফারাক থাকবে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে।


ফাইজার-বায়োএনটেক জুটির টিকাকে গত সপ্তাহে ছাড়পত্র দিয়েছিল ব্রিটেন। মঙ্গলবার থেকে ব্রিটেনে শুরু হয়েছে গণটিকাকরণ সূচি। প্রথম পর্বে টিকা গ্রহণের তালিকায় রয়েছেন প্রবীণ নাগরিক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই টিকারও দুটি ডোজ নিতে হবে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ফাইজারের টিকা খুব একটা সস্তা নয়। কিন্তু ব্রিটেনে যে দামে ফাইজারের টিকা পাওয়া যাবে আফ্রিকায় সে দামে পাওয়া যাবে না বলে আশ্বস্ত করেছে ফাইজার। মঙ্গলবার সংস্থার সিইও অ্যালবার্ট বোরলা বলেছেন, আমরা দামের একটি স্তর রাখার চেষ্টা করছি। উন্নত বিশ্বে তাদের জিডিপি-র উপর নির্ভর করে একরকম দাম ধার্য হবে। আবার মধ্যমানের রোজগার সম্পন্ন দেশ বা নিম্ন আয়ের দেশ যেমন আফ্রিকার ক্ষেত্রে আমরা কোনও লাভ না রেখেই টিকাগুলি দাম নির্ধারণ করব।

উন্নত দেশ হলেই যে ফাইজারের টিকার দাম দারুণ চড়া হবে তেমনটাও নয়। বোরলা জানিয়েছেন, আমেরিকায় হয়তো ফাইজারের প্রতি ডোজের দাম পড়বে তাদের একদিনের ভরপেট খাবারের গড় দামের সমান।

তবে ভিন্ন ভিন্ন দাম নিয়ে বিশ্বের বাজার ধরার লক্ষ্য থাকলেও ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে হ্যাপা রয়েছে। এই টিকার সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন ৭০-৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার আল্ট্রা কোল্ড চেন। এই ধরনের পরিকাঠামো ভারতের মতো দেশে তো বটেই, বিশ্বের বহু উন্নয়নশীল দেশেও সমস্যাজনক। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই বোরলা জানিয়েছেন এই ধরনের ঝক্কিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ এড়ানো যা কিনা, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। মাইনাস ৭০ ডিগ্রির বদলে সহজ ভাবে অর্থাৎ রেফ্রিজারেটরে রেখে একে সংরক্ষণ করা যায় কি না, বা তার জন্য কোনও নতুন ফর্মুলা আনা যায় কিনা সে দিকটিও খতিয়ে দেখছে কোম্পানি।

সম্প্রতি পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কর্তা আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছেন তাঁদের দুটি ডোজের সম্মিলিত দাম হাজার টাকার বদলে ৫০০ টাকায় নেমে আসতে পারে। সেখানে ফাইজারের দুটি ডোজ মিলিয়ে দাম পড়ছে তিন হাজার টাকার কাছাকাছি। ফলে এত দামি টিকা নিয়ে বিশ্বের বাজার ধরার বিষয়টি যে বিলক্ষণ কঠিন তা  সম্ভবত বুঝেই দামের ফারাক রেখে সব দেশের কাছে পৌঁছতে চাইছে ফাইজার।