নয়াদিল্লি: দেশ সেপ্টেম্বরেই নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পিক অর্থাত সর্বোচ্চ পর্যায় পেরিয়ে এসেছে বলে জানাল সরকারি প্যানেল। কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত এই প্যানেলে আছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ ও আইআইটির সদস্য়রা। গত ২ সপ্তাহ ধরে দেশে সংক্রমণের ক্রমহ্রাসমান কেসের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তাঁরা। একটা সময়ে ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কেস ৯৭ হাজারের ওপর চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে তা নেমে এসেছে দৈনিক ৬০ হাজারের ঘরে। আজ রবিবার সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৬১৮৭১। এপর্যন্ত দেশে মোট সংক্রমণ সংখ্যা ৭৫ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছেছে। আজ নিয়ে পরপর দুদিন অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা ছিল ৮ লক্ষের কম। গত ৮ আগস্ট থেকে দৈনিক সংক্রমণের কেস বৃদ্ধিতে সবার আগে ছিল ভারত। প্রায় ২ মাসের মাথায় আজ প্রথম সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে আমেরিকায়।


সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেশে করোনাভাইরাসের শক্তিক্ষয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকারি প্যানেল। তাদের অভিমত, সুরক্ষামূলক বিধি ঠিকঠাক মেনে চলতে পারলে আগামী বছরের গোড়ায়, মারণ ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। অ্যাকটিভ কেসের সংখ্যা একেবারে ন্যূনতম হতে পারে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ।
আইআইটি হায়দরাবাদের অধ্যাপক এম বিদ্য়াসাগরের নেতৃত্বাধীন কমিটির ধারণা, বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। বিদ্য়াসাগর বলেছেন, ২০২১ এর ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ সংক্রমণের কেস জিরো অর্থাত্ শূন্য হবে না। সেটা কখনই হয় না। কিন্তু কেসের সংখ্যা হবে একেবারে ন্যূনতম। আমরা অবশ্যই এই আশা করতে পারি।
এপিডেমোলজি অর্থাত মহামারী গবেষণায় এই স্টেজকে এনডেমিকও বলা হয়। অনেক মহামারী বিশেষজ্ঞেরই বিশ্বাস, যে পর্যায়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পুরোপুরি কমে যায়, সেখানে পৌঁছতে অন্তত ৮-১০ মাস সময় লাগে।
প্যানেল বলেছে, করোনাভাইরাস অতিমারী যখন সবচেয়ে ধীর গতিতে এগবে, তখন সংখ্যাটা দাঁড়াতে পারে প্রায় ১ কোটি ৫ লক্ষ।
কিন্ত একদিকে যখন দেশে সংক্রমণের কেস কমছে, মোট সংক্রমণ সংখ্যার বিচারে আমেরিকা শীর্ষে চলে এসেছে, তখন ভারতে কিন্তু মৃত্য়ুর সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনার বলি হয়েছেন আরও ১০৩৩ জন। মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩১। এই প্রথম ২ সপ্তাহে দৈনিক মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়াল। শেষবার দৈনিক হাজারের বেশি লোক মারা গিয়েছিল ৩ অক্টোবর। সংখ্যাটা ছিল ১০৬৯। দেশে এপর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর, ১২৯০ জন।
সরকারি প্যানেল অবশ্য দোরগোড়ায় হাজির হওয়া উত্সবের মরসুম ও আগামী শীতে সংক্রমণ আচমকা বেড়ে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে। উত্সবের মরসুমে নিরাপদ দূরত্ববিধির তোয়াক্কা না করে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হতে পারে ধরে নিয়ে প্যানেল বলেছে, স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণ বাড়বে এর জেরে।